মাদ্রাসার ভবন নির্মাণে অনিয়ম, ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন

বান্দরবানঃ জেলারা আলীকদম উপজেলায় পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে উপজেলার ২নং চৈক্ষং ইউনিয়নের রেপার পাড়া এলাকায় ইসলামীয় দারুল উলুম মাদ্রাসা চলমান নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের একাধিক খবর প্রকাশিত হলেও কোন ধরণের ব্যবস্থা না নিয়ে সেই অনিয়মকেই নিয়মে পরিণত করে নির্মাণকাজ চলমান রেখেছে অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ করায় এ বিষয়ে আমাদের বাণী ও স্থানীয় পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও কোন ধরণের কর্ণপাত করেনি প্রশাসন। এমনকি অঝোর বৃষ্টিতে ময়লাযুক্ত নির্মাণ সামগ্রি দিয়ে নির্মাণ কাজ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলেও ঠিকাদারের পক্ষে সাপাই গেয়েছেন কর্তা ব্যক্তিরা।

স্থানীয়দের বাধাঁর মুখে পড়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অনিয়মের এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় স্থানীয় মানুষের মাঝে। আর তখনই টনকনড়ে কর্তৃপক্ষের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্বত্য অঞ্চলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার বরাদ্দের এই মাদ্রাসার ভবন নির্মাণের কাজটি পান মেরি এন্টারপ্রাইজ এর  ঠিকাদার মেরি মার্মা। কাজটির শুরুতেই খুবই নিন্ম মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করেছেন ঠিকাদার। আর এই নিন্ম মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে দ্রুত এই অনিয়ম ঢাকতে বর্ষার এই মুষলধারার বৃষ্টির মাঝেই চালিয়ে গেছেন নির্মাণ সামগ্রীর কাজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , তড়িঘড়ি করে নিন্মমানের ইট, সিমেন্ট এমনকি কাঁদা মিশ্রিত খুবই নিন্মমানের খোয়া ব্যবহার করে চলমান রয়েছে ভবন নির্মাণের কাজ। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কাজের সময় জেলা পরিষদের কতৃপক্ষ উপস্থিত থাকার পরেও ঠিকাদার তার নিজের খেয়াল খুশি মতো কাজ করে যাচ্ছে।

গত ১৯ জুনআলীকদমে মাদ্রাসার ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতি শিরোনামে আমাদের বাণী’তে সংবাদ পরিবেশন ও মুষলধারে বৃষ্টির মাঝে তড়িঘড়ি করে ঢালাইয়ের কাজ করা ভিডিও ভাইরাল হলেও যথাযথ কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করে এখনও চলছে সেই কাজ।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে ভবনটি কয়দিন থাকবে তা বলা মুশকিল। এটা মাদ্রাসার ভবন কোন দুর্ঘটনা হলে এর দায় কি ঠিকাদার নেবেন।

আরও পড়ুনঃ

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এ মাদ্রাসা ভবন যেভাবে খুবই নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তুমুল বৃষ্টির মধ্যেই চলছে বেইজ ঢালাইয়ের কাজ তাতে ভবন নির্মাণ হলে যে কোন সময় তা ভেঙ্গে যেতে পারে।

এর আগে অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মোঃ মফিজ আহমেদ বলেছিলেন, বৃষ্টি মধ্যে কাজ না করে কথা জানালে তারা কোন কর্ণপাত না করে কাজ চালিয়ে যান। এখানে কোন ধরণের তদারিক করছে না প্রশাসন।

২নং চৈক্ষং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীনএ ব্যপারে কথা হলে কাজের মান ও তড়িঘড়ি করে অনিয়ম ঢাকতে বৃষ্টির মধ্যে ঢালাইয়ের কাজ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার মেরি মার্মা বলেন, কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে নির্মাণ কাজ চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম কাউছার হোসেন আমাদের বাণী’কে বলেন, আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। জেলা পরিষদ থেকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জিয়াউর রহমানের। আপনি তার সাথে কথা বলেন। আমিও বিষয়টি জানাচ্ছি।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জিয়াউর রহমান ঠিকাদারের সাফাই গেয়ে আমাদের বাণী’কে বলেন, আমাদের প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে কাজ চলছে। বৃষ্টির মধ্যে না, বৃষ্টি থামলে সেই মাঝে মাঝে কাজ চলেছে। নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি দেখব।

আমাদের বাণী/০২/৭/২০২২/বিকম

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.