
শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি ও জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিকসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও শ্রীবরদী এবং ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পত্র কিনেছেন শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের নৌকার প্রার্থী ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাজারের অধিক নেতাকর্মী নিয়ে তিনি এই মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন।
মনোনয়ন পত্র ক্রয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন, শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পরিষদের সদস্য এডভোকেট চন্দন কুমার পাল, শ্রীবরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু সাঈদ, ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক, সংসদীয় আসনটির রানী শিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগ, ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন, মাজলিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পলাশ, ১নং কংশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফসহ ঝিনাইগাতী উপজেলার সাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদk, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার সকল অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের নিয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। এসময় প্রায় হাজারের উপর রাজনৈতিক নেতাকর্মী এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম পক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়ন পত্র সংগ্রহকালে উপস্থিত একাধিক নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলেও ঝিনাইগাতী থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে পা রাখেননি এই উপজেলার কোন নেতা। ঝিনাইগাতীবাসী মনে প্রাণে বিশ্বাস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঝিনাইগাতী থেকে আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমকে নৌকার মনোয়ন দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুযোগ করে দেবেন।
তারা বলেন, মনোনয়ন পত্র সংগ্রহকালে নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরাও সেই আশ্বাস দিয়েছেন এবার তৃণমূলের পরীক্ষিত নেতা দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারি আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমকে নৌকার মনোনয়ন দিবেন।
দলের কেন্দ্রীয় সূত্র আমাদের বাণী’কে নিশ্চিত করেছেন, সব ধরণের প্রতিবেদন আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম এর পক্ষে আছে। তার বিরুদ্ধে কোন নেগেটিভ বিষয় পাওয়া যায়নি। দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও তার প্রতি আস্তা রাখেন এবং তাঁকে নৌকার প্রার্থী করার বিষয়ে গ্রীণ সিগন্যাল দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির দায়িত্বে থাকা এক কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের বাণী’কে বলেন, আমাদের কাছে যতদূর তথ্য আছে তাতে আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম মনোনয়ন পাবেন। প্রধানমন্ত্রী তার প্রতি ইতিবাচক। তবে
জানা গেছে, আসটির বর্তমান এমপি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক। যিনি একসময় ছিলেন আমলা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক। শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী) আসনে এরপর আরও দুই নির্বাচনে তাঁকেই বেছে নেয় আওয়ামী লীগ।তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিজয়ের পর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় কয়েক মাস পর পর দেখা মিললেও ঝিনাইগাতী উপজেলায় তাকে খুব একটা দেখা যায়নি। আমলা থেকে সরাসরি এমপি হয়ে দল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় শ্রীবরদী এবং ঝিনাইগাতীবাসী তাকে খুব একটা চান না নৌকার প্রার্থী হিসেবে। দলের মধ্যে তাকে নৌকার মনোনয়ন না দিতে একচ্ছত্র নেতাকর্মীরা।
ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম এর সাধারণ ভোটারদের মাঝে দিন রাত আওয়ামী লীগের উন্নয়নের বার্তা এবং আওয়ামী সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সুফল পৌছে দিতে কাজ করে আসা দলীয় হাইকমান্ডের নজরে এসেছে। আর তার এই কৃতকর্ম দলীয় হাইকমান্ডে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বাড়িয়ে দিয়েছে তাঁর রাজনৈতিক ইমেজ।
ফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের ইতিবাচক মনোভাব, গোয়েন্দা প্রতিবেদন, জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন এবং শ্রীবরদী ও ঝিনাগাতীর তৃণমূল ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একচ্ছত্র সমর্থন এবং মনোনয়ন ক্রয়কালে উপস্থিতি প্রমাণ করে শেরপুর-৩ আসনে পরিবর্তন আসছে নৌকার। কপাল পুড়ছে একসময়ের আমলা এবং রাজনীতিতে উড়ে এসে জুড়ে বসা বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন এমপি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হকের।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম আমাদের বাণীকে বলেন, রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ এবং প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানগার্ড হয়ে কাজ করেছি। আমাকে মূল্যায়ন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা করবেন আমি তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। তবে তিনি বলেন, আমি মনোনয়ন পাই বা না পাই দল যাকেই মনোনয়ন দিক আমি নৌকার মানুষ নৌকাকে বিজয়ী করে আনব।
উল্লেখ্য, ছাত্রজীবনে ৯০-এর স্বৈরাচার ও রাজাকার হটাও আন্দোলন এবং পরবর্তীতে ঝিনাইগাতী আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি ১৯৯৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। বিগত দুইটি জাতীয় নির্বাচনে নিজে প্রার্থী হলেও দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন ব্যক্তিকে নয় শেখ হাসিনার নৌকাকে বিজয়ী করতে সর্বাত্মক মাঠে ছিলেন তিনি। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ২০০২ সালে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ও ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সু-সংগঠিত করে তোলেন। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলার প্রতিটি নেতা কর্মীদের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে তিনি ময়ময়নসিংহ বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ শেরপুর-৩: কেন্দ্রে নয় জনতার দরবারে ঘুরছেন নৌকার প্রার্থী নাইম
Leave a Reply