শেরপুর-৩: কেন্দ্রে নয় জনতার দরবারে ঘুরছেন নৌকার প্রার্থী নাইম

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগের ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেন্দ্রে যাতায়াত বাড়িয়ে লবিং-তৎপরতার পাশাপাশি এলাকায় উঁকিঝুঁকি বাড়িয়ে কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। হাজির হচ্ছেন নানা সামাজিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে। দিচ্ছেন অনুদান এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের খরচাপাতি। ফলে রাজনীতির অন্দরমহল থেকে শুরু করে মাঠে ময়দানেও উঠে আসছে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ও আলোচনা।

তবে ব্যতিক্রম এক প্রার্থীকে দেখা গেছে, যিনি নৌকার মনোয়নের জন্য কেন্দ্রে লবিং বাদ দিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই জনতার দরবারে হাজির হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তা নিয়ে যেমন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তেমনি নিজের সাধ্যমত সহযোগিতা করছেন দল মত নির্বিশেষে নিন্ম আয়ের মানুষদের। আর তিনি হচ্ছেন শেরপুর তিন আসন (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রার্থী ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম।

ছাত্রজীবনে ৯০-এর স্বৈরাচার ও রাজাকার হটাও আন্দোলন এবং পরবর্তীতে ঝিনাইগাতী আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি ১৯৯৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। বিগত দুইটি জাতীয় নির্বাচনে নিজে প্রার্থী হলেও দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন ব্যক্তিকে নয় শেখ হাসিনার নৌকাকে বিজয়ী করতে সর্বাত্মক মাঠে ছিলেন তিনি। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ২০০২ সালে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ও ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সু-সংগঠিত করে তোলেন। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলার প্রতিটি নেতা কর্মীদের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শ্রীবরদী এবং ঝিনাইগাতী বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নে নিজের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে অনুদান, অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা, বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ, বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ, নিন্ম বৃত্ত মানুষের আর্থিক অনুদান সহ প্রায় কয়েক লাখ মানুষকে করোনাকালীণ সময়ে আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন তিনি।

নৌকার মনোনয়ন পেতে যেখানে প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে লবিংয়ে ব্যস্ত ঠিক সেই সময়ে কেন্দ্রে নয় শেখ হাসিনার উন্নয়ন এবং অগ্রগতির বার্তা ও সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মাঝে ধর্ণা দিচ্ছেন তিনি। এই নেতা মনে করেন, শেখ হাসিনার শক্তি জনতা, এই জনতার নিকট আওয়ামীলীগের উন্নয়নের বার্তা এবং আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সহযোগিতা, ব্যক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে মানুষের জীবন মানের পরিবর্তন করতে পারলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দিবেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক দলকে পরিচালনার ক্ষেত্রে যেমন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয়েছেন তেমনি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি (উপজেলা চেয়ারম্যান) হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করে চলেছেন। অবহেলিত উপজেলার কাঙ্খিত উন্নয়নসহ রাতদিন মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।

আসটির বর্তমান এমপি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক। যিনি একসময় ছিলেন আমলা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক। শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী) আসনে এরপর আরও দুই নির্বাচনে তাঁকেই বেছে নেয় আওয়ামী লীগ।তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিজয়ের পর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় কয়েক মাস পর পর দেখা মিললেও ঝিনাইগাতী উপজেলায় তাকে খুব একটা দেখা যায়নি। আমলা থেকে সরাসরি এমপি হয়ে দল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় শ্রীবরদী এবং ঝিনাইগাতীবাসী তাকে খুব একটা চান না নৌকার প্রার্থী হিসেবে। দলের মধ্যে তাকে নৌকার মনোনয়ন না দিতে একচ্ছত্র নেতাকর্মীরা।

স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলেও ঝিনাইগাতী থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে পা রাখেননি এই উপজেলার কোন নেতা। ঝিনাইগাতীবাসীর আশা এইবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঝিনাইগাতী থেকে আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমকে নৌকার মনোয়ন দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুযোগ করে দেবেন। তাঁরা মনে করেন, তিনি নৌকার মনোনয়ন পেলে শিক্ষা স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে ঝিনাইগাতীবাসীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.