সরকারি সেতু ব্রিক্রি হলো, জানেনই না থানচি উপজেলা প্রকৌশলী

ক্রয়কৃত পরিত্যক্ত সেতুটি ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকেরা। ছবি: আমাদের বাণী

বান্দরবানঃ গত ১১ মে বুধবার “সরকারি সেতু বিক্রি করে দিলেন থানচির উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির” শিরোনামে দেশের বহুল প্রচারিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল আমাদের বাণী ডটনেটে খবর প্রকাশিত হলে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ মে, ২০২২) সরেজমিনে পরদর্শনে যান বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মোঃ মাহফুজুল হক।

মাহফুজুল হক সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে সরকারি পরিত্যক্ত সেতুটি বিক্রি করেননি থানচি উপজেলা স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন দাবি করে বলেন, কে বা কাহারা সেতুটি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না।

সরকারি সেতুটি যারা ভেঙ্গে নিয়ে গেছে তারা উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের কাছ থেকেই ক্রয় করেছেন বলে আমাদের বাণী ডট নেট এর কাছে দাবি করেছে উল্লেখ করলে প্রকৌশলী  মোঃ মাহফুজুল হক পরামর্শ দেন বলেন, সরকারি সেতু যারা ভেঙ্গে নিয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করতে ।

আরও পড়ুনঃ লামার রূপসীপাড়া ইউনিয়নে চলছে রমরমা জন্মসনদ বাণিজ্য!

তিনি আমাদের বাণী’ ডট নেট এর কাছে দাবি করেন, থানচির স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে তিনি সরেজমিনে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের টিএন্ডটি পাড়ার পরিত্যক্ত ব্রিজটি পরিদর্শনে যান স্থানীয় সাংবাদিকেরাও অভিযোগের সত্যতা পায়নি বলে তাকে জানান। স্থানীয় সাংবাদিক কারা উল্লেখ করলে তিনি শুধুমাত্র একজন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, থানচি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের টিএন্ডটি পাড়ায় ১৯৯০-৯১ সালে নির্মিত একটি সেতু নদী ভাঙনের কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন যাবৎ সেতুটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও গত ২৯ এপ্রিল হঠাৎ করেই জাকির হোসেন সেতুটি স্হানীয় একজন ঠিকাদারকে সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন।

আরও পড়ুনঃ থানচিতে অনুমোদনহীন জ্বালানি তেলের দোকানে ছয়লাব

সরেজমিনে গিয়ে তখন দেখা যায়, তিন জন শ্রমিক খুব ভোরে লোহা কাটার ইলেকট্রিক করাত দিয়ে সেতুতে ব্যবহৃত লোহাগুলো কেটে কেটে একজায়গায় জমা করে রাখছে । রড কাটার কাজে নিয়োজিত ৩ শ্রমিকের নাম মোহাম্মদ রাজু, মোমেন ও নুরুন্নবী। কার নির্দেশে তারা সেতু ভেঙে লোহা নিয়ে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ৩ জন শ্রমিক অকপটে স্বীকার করেন এলজিইডি অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের নির্দেশে তারা সেতুর লোহা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এই সময় ভিডিও ধারণ করতে গেলে শ্রমিক ‘রাজু এসে বলেন ভাই আমরা তো শ্রমিক জাকির সাহেবের অর্ডারে কাজ করছি,আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না তো’।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও ব্রেজটি একজন প্রকৌশলী বিক্রি করেছেন বলেই ঐ শ্রমিকরা তা ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন বলে আমাদের বাণী ডটনেট কে জানান। উল্লেখ্য যে, যে শ্রমিকেরা ব্রিজটা ভেঙ্গে নিয়ে গেছেন, বিজ্রটি উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন কাছ থেকেই কিনেছেন তার ভিডিও স্বীকারোক্তি আমাদের বাণী ডট নেট কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত আছে।

বাস্তবে ব্রিজটি বিক্রি করা হলেও থানচি উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মোঃ মাহফুজুল হক ব্রিজটি বিক্রির সত্যতা না পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে  স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী এন এস এম জিললুর রহমান কাছে জানতে চাইলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.