
মৌলভীবাজারঃ জেলার কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় কিশোরী। এদিকে তার সঙ্গে থাকা ছোটবোনকে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে তাদের প্রেমিকরা।
আবাসিক হোটেল থেকে ফেরার পর সোমবার রাতে জুড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর বৈদ্যুতিক লাইনে পড়ে ঝলসে যাওয়া বড়বোন সিলেট ওসমানী হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুই কিশোরীর একজনের বয়স ১৫ ও অপরজনের ১২ বছর। তাদের বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। সম্প্রতি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুই কিশোরীর সঙ্গে রাসেল ও জীবন নামক দুই যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
রাসেলের বাড়ি জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের চাটেরা গ্রামে এবং জীবনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নে। তারা ৭ মে দুই কিশোরীকে বেড়ানোর কথা বলে সিএনজি অটোরিকশাযোগে কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের পাশে একটি নির্জন টিলায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে প্রেমিক জীবন ও রাসেল তাদের কুপ্রস্তাব দিলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করে।
এ সময় জীবন ও রাসেল ওই দুই বোনকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বড়বোন টিলার নিচে পড়ে যায়। টিলার নিচ দিয়ে টানা বিদ্যুতের লাইনে জড়িয়ে গুরুতর আহত হয় বড়বোন। বিদ্যুৎ লাইনের উপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ হয়। শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ওই কিশোরীর (বড়বোন) শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে ঘটনার পর রাসেল ও জীবন কিশোরীর ছোটবোনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে সিলেট নগরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। রোববার রাতে তাকে জুড়ী উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই চত্বরে একা ফেলে রেখে পালিয়ে যায় কথিত প্রেমিক রাসেল ও জীবন।
খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে সেখান থেকে বাড়ি নিয়ে যান। অসুস্থ অবস্থায় পরদিন তাকে মৌলভীবাজারের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার দুই কিশোরীর বাবা (৫০) বাদী হয়ে জুড়ী থানায় মামলা করেন। এর আগে নিখোঁজের ব্যাপারে কিশোরীর বাবা রোববার জুড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের পরিচয় শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
Leave a Reply