
ভৈরবের বাজারে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। স্থানীয় বাজারের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে নামী দামী কোম্পানিগুলি তাদের উৎপাদিত বোতল জাত তেল সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বাড়তি দামে দিলে কোম্পানির স্থানীয় এজেন্সিগুলোর থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কিশোরগঞ্জের অন্যতম বন্দরনগর খ্যাত ভৈরব বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে কোন বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। তবে খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে এবং দাম বেড়েছে লিটার প্রতি ১০-১৫ টাকা। কয়েক দিন আগেও খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০-১৮৫ টাকা করে বিক্রি হতো। কিন্তু হঠাৎ করে খোলা তেলের দাম বেড়েছে।
স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ফারুক অভিযোগ করে জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে বাসার জন্য মশলা দুধ সেমাইসহ অন্যান্য ঈদ সামগ্রী কিনতে ভৈরব বাজারের দোকানে গিয়েছিলাম। কিন্ত বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরেও বোতলজাত সয়াবিন তেল পেলাম না। দোকানগুলোর তেল রাখার রেক খালি। সব দোকানদার বলল এজেন্সি মালিকরা গত কয়েকদিন যাবত তেল সরবরাহ দিচ্ছে না। তবে খোলা তেল অনেক দোকানে আছে। প্রতি লিটার তেলের দাম ১৯০ টাকা।
তিনি অবাক হয়ে বলেন, বন্দর নগরী ভৈরব বাজার থেকে তেল উধাও। কেন তেল সরবরাহ নেই ব্যবসায়ীরা কিছুই বলতে পারছে না। শুধু বলছে এজেন্সি মালিকরা তেল সাপ্লাই দিচ্ছে না। আমি আমার জীবনেও তেল নিয়ে বাজারে এমন ঘটনা কখনও দেখিনি । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন পণ্য বেশী দামে হলেও পাওয়া যেত। অবশেষে আমাকে এক দোকানদার বললো এক এজেন্সি মালিকের কাছে গেলে আপনাকে সয়াবিন তেল দিতে পারে। অনেকদূর হেঁটে ওই এজেন্সি মালিকের কাছে গিয়ে তেল দেয়ার কথা বললাম। তিনি আমাকে ভাল করে চেনেন। এসময় তার ছেলেকে ফোনে বললেন, সাংবাদিক ফারুক ভাইকে ৫ লিটার তেল দিয়ে দাও, দাম ৭৬০ টাকা। তেল দিয়ে বললেন, ভাই কাউকে আমার তেল দেওয়ার কথা বলবেন না। কারণ আপনাদের মত সুধীজনের জন্য আমি কয়েক বোতল তেল রেখেছি। কাউকে বলবো না কথা দিয়ে তেলের বোতল নিয়ে তার দোকান থেকে বিদায় নিলাম।
আসাদুজ্জামান ফারুক আরও বলেন, তেল এখন সোনার হরিণ। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব, সত্যিকার অর্থে বাজারে তেল নেই? নাকি ব্যবসায়ীরা গোপনে গুদামজাত করে মুনাফার ফায়দা লুটছে। বিষয়টির প্রশাসনের দেখা উচিত।
ভৈরব বাজারে মুদি ব্যবসায়ী মো.সুজন মিয়া বলেন, কোম্পানির কাছ থেকে আমরা অর্ডার দিয়েও আমরা বোতলজাত তেল পাচ্ছি না। কয়েকটি কোম্পানির বোতলজাত তেল কয়েক মাস ধরে সাপ্লাই বন্ধ রয়েছে। তবে সেইসব নামী দামী কোম্পানির স্থানীয় এজেন্সিতে অতিরিক্ত দামে বোতলজাত তেল মিলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভৈরব বাজারের সার ব্যবসায়ী মো.তারেক আহমেদ বলেন, বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে হতবাক হয়ে গেলাম। বোতল জাত কোন ব্রান্ডের তেল নাই। খোলা তেল ১৯৫ টাকা লিটার। বাজারে তেলের অভাব নেই। কিন্তু বেশি দাম দিলে পাওয়া যায়। কাজেই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, সয়াবিন তেলের বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ যদি বোতলজাত তেলের সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply