সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকেই সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে, রাস্তাঘাটেও ছিল তীব্র যানজট। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিআইডব্লিউটিএ এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে নৌ পুলিশ।

শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সদরঘাট এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়।

ঈদ উপলক্ষে সকালে বিভিন্ন রুটে বিশেষ কিছু লঞ্চ থাকায় সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় ছিল সদরঘাটে। মাঝখানে একটু ভিড় কমলেও দুপুরের পর বেলা গড়ানোর সাথে সাথে তা আরো বাড়তে থাকে। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত যাত্রী না নেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও বেশিরভাগ লঞ্চই নির্দেশনা মানছে না। লঞ্চের ছাদেও যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে। লঞ্চ মালিকরা বলছেন, তারা অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছেন না, ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী তুলছে স্টাফরা। তবে কিছু লঞ্চে মালিকরা নিষেধ করলেও যাত্রীরা জোর করেই ছাদে উঠতে দেখা গেছে।

লঞ্চ মালিকরা জানান, এবারের ঈদে লকডাউন নেই, যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় বেধে দেয়া হয়নি। আর পর্যাপ্ত পরিমাণ লঞ্চ ঘাটেই থাকে। তাই প্রতিদিনই যাত্রীরা নিজস্ব রুটে সুবিধামত লঞ্চে যাতায়াত করতে পারে । ঘাটে যাত্রীদের চাপ থাকলেও এবার লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের চাপ অনেক কম। এদিকে রাস্তাঘাটে পর্যাপ্ত যানবাহন থাকায় গত বছরের চেয়ে এবার সহজে সদরঘাটে পৌঁছাতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন অনেক যাত্রী।

কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যাত্রীদের পৌঁছে দিতে সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সারি-সারি লঞ্চ দাঁড়িয়ে ছিল। দুপুরের পর যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকলে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে বড় বড় লঞ্চ পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রশাসনের জরিমানার ভয়ে যাত্রী ভরে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অনেক লঞ্চ ঘাট ছেড়ে দিচ্ছে।

মিরপুর থেকে আগত ভোলাগামী যাত্রী আল আমিন বলেন, আগেরদিন বৃহস্পতিবার থাকায় রাস্তাঘাটে প্রচুর জ্যাম ছিল, শুক্রবারে ভাবছি স্বাচ্ছন্দ্যে ঘাটে আসতে পারবো, তাতেও ৩ঘন্টার বেশি লাগছে। আর লঞ্চেও প্রচুর ভীড় দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া ঠিকঠাক না থাকলে জার্নিটা ঝুকিপূর্ন হবে। ঈদ উপলক্ষে ঘাটে লঞ্চের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিৎ ছিল।

এদিকে যাত্রী বেশি হওয়ায় ঝুকি না নিয়ে অনেকে লঞ্চে না উঠের পরবর্তী লঞ্চের জন্য ট্রার্মিনালে অপেক্ষা করছেন। পরিবার, বাচ্চা নিয়ে এই অপেক্ষাটা বড় রকমের ভোগান্তি বলে জানান যাত্রীরা।

যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক লঞ্চ ঘাটে রয়েছে জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) আলমগীর কবির বলেন, ঈদ যাত্রার জন্য দেড়শ টিরও বেশি লঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। বিকেলে ৫০টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ঘাট ছেড়ে গেছে। রাত পর্যন্ত যাত্রীদের জন্য আরও ৭০টি লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। যাত্রীদের জন্য কোনো লঞ্চ সংকট হবে না।

এ বিষয়ে সদরঘাট নৌ পুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়ুম আলী সরদার বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এছাড়া ঈদযাত্রায় জননিরাপত্তার কোন ঘাটতি না থাকে সেদিকেও আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।

স্থলভাগে যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডিএমপি পুলিশের এক ইন্সপেক্টর সময়ের আলোকে জানান, বিগত বছরগুলি থেকে এবার সদরঘাটে চাপ কম। যাত্রীরা যাতে সদরঘাটে পৌছতে কোন হয়রানি না হয়, তা আমরা নজরদারি করছি। গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া থেকে সদরঘাট পর্যন্ত প্রতিটি মোড়ে গেটে আমাদের ফোর্স আছে। কোতোয়ালি এলাকায় পুলিশের কন্টোল রুম আছে। এখানে একজন এসি দায়িত্বে আছে, তিনি সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.