ঢাকা কলেজে র‌্যাব-ডিবির অভিযান

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজে অভিযান পরিচালনা করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও ডিবির সদস্যরা।

অভিযানে ১০জন আটক করা হয়েছে বলে খবর।

রোববার বিকেল পাঁচটায় কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসের ১০১ নম্বর কক্ষে অভিযান চালায় র‌্যাব।

ঢাকা কলেজের নর্থ হলের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রফিক বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, অভিযান শেষে দুটি মোবাইল সেট ও জহির হাসান জুয়েল নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। আটক জুয়েল ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সংঘর্ষে নাহিদ নিহতের ঘটনায় শনাক্ত ইমন ও জুয়েল একই কক্ষে থাকতেন। জুয়েল হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী। সবমিলিয়ে ১০ জনকে তুলে নিয়ে গেছে র‌্যাব ও ডিবি।

তবে শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রফিকের দেওয়া তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

কারণ অভিযান ও ছাত্রদের আটকের বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি র‌্যাব বা ডিবির সদস্যরা।

তবে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষ। যদিও শিক্ষার্থী আটকের বিষয়টি জানা নেই তাদের।

এ বিষয়ে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মো. কামরুজ্জামান বলেন,  ছাত্রাবাসে ডিবি ও র‌্যাব সদস্যরা এসেছিলেন। দুটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করেছেন তারা। তবে কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করে নেওয়া হয়েছে কি না সে সম্পর্কে আমি জানি না।

তুচ্ছ ঘটনাক কেন্দ্র করে গত ১৮ এপ্রিল দিন গত রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

এতে নাহিদ ও মোরসালিন নামে দুজনের প্রাণহানি এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন।

এ ঘটনায় অন্তত তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।  ডেলিভারিম্যান নাহিদের নিহতের ঘটনায় বাবা নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মুরসালিনের ভাই বাদী হয়ে আরও একটি হত্যা মামলা করেছেন।

এছাড়া দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেওয়ার অভিযোগে নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে যে মামলা করেছেন, সেখানে মকবুলকেই প্রধান আসামি করা হয়েছে।  মকবুল বর্তমানে রিমান্ডে।

এদিকে ভিডিওফুটেজ ও তথ্য বিশ্লেষণে সেদিন সংঘর্ষে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ মাঠে সক্রিয় ছিল বলে প্রমাণ মিলেছে।

তাদের অনেকের কাছেই ছিল ধারালো দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও রড। পরিচয় আড়াল করতে অধিকাংশের মাথায় ছিল হেলমেট।

এর মধ্যে একটি গ্রুপের অনুসারী বাংলা বিভাগের ছাত্র ইমন ছোরা দিয়ে  নাহিদ মিয়াকে একাধিক আঘাত করেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ইমন ছোরা দিয়ে আঘাত করলেও নাহিদকে প্রথম মারধর শুরু করেন কাইয়্যুম ও সুজন ইসলাম নামে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই কর্মী।

এসব তথ্য পাওয়ার পরই ঢাকা কলেজে অভিযান চালালো র‌্যাব।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.