মার্চে ৯৬ নারীর আত্মহত্যা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে চলতি বছরের মার্চ মাসে মৃত্যু হয়েছে একজনের। অপরদিকে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের পর কারাগারে দুইজনের মৃত্যু হয়। একই সময়ে ৩৯৭টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় অন্তত ৩৫ জন সাংবাদিক নানাভাবে হুমকি, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মার্চ মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত কারাগারে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ছয়জন কয়েদি ও এক বিদেশি নারীসহ চার হাজতি। কারাগারে অপর্যাপ্ত চিকিত্সার কারণে বন্দিরা যথাযথ চিকিত্সা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারাগারের ভেতরে চিকিত্সা ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি, মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করা উচিত বলে মত দেয় সংগঠনটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা বিগত মাসগুলোর তুলনায় বেড়েছে, যা উদ্বেগজনক। মার্চ মাসে ৩৯৭টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় সংগঠনটি। এর মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৬৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ২৩টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৩টি, প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়ৈছে ৬ জন।

উল্লেখ্য, ধর্ষণের শিকার ৬৯ জনের মধ্যে ৫৩ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছে। এছাড়া দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭ জন কিশোরী এবং ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ২ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি ২৪ টি করে এবং শারীরিক নির্যাতনের ৪৪ টি ঘটনা ঘটেছে।

এ সময়ে ৩৬জন শিশু-কিশোরীসহ মোট ৯৬ জন নারী আত্মহত্যা করেছে। যা গত ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ২৯ জন বেশী। এছাড়া মার্চে চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, ঢাকা, ভোলা, পটুয়াখালী ও রাজশাহীতে সাতটি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া গণপিটুনিতে আটজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন ।

প্রতিবেদনে স্বাধীন সাংবাদিকতার ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় মার্চ মাসে অন্তত ৩৫ জন সাংবাদিক নানাভাবে হুমকি, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাপ্রাপ্ত ও আহত হন ১০ জন সাংবাদিক, ১৫ জন সাংবাদিক নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন, ৪ জন সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া হয়েছে, ১ জন সাংবাদিককে আক্রমণ এবং ৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১২টির বেশি দৈনিক পত্রিকার সংবাদের ভিত্তিতে করা হয় এই প্রতিবেদন। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীর মাধ্যমে তা যাচাই করা হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.