লঞ্চঘাটে ৪ ছাত্রকে কান ধরে উঠবস

বরিশাল নদী বন্দরে প্রবেশ টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে কান ধরে উঠবস ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিআইডব্লিউটিএর কাউন্টার স্টাফদের বিরুদ্ধে।

এই ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা নদী বন্দরে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করেছে।

শুক্রবার রাত ৮টায় বরিশাল নদী বন্দরের দুই নম্বর গেটের কাউন্টার থেকে এই ঘটনার উৎপত্তি হয়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসাইন বলেন, একজন অতিথিকে বিদায় দিতে বরিশাল নদী বন্দরে ৮টার দিকে আসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের আরিফুর রহমান, রাকিব, আশিক ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগের ইমরান। এসময় ঢাকায় যে যাবে তার প্রবেশ টিকিট ক্রয় করে ছাত্ররা। বাকি ৩ জনের টিকিট না কাটা নিয়ে কাউন্টারে থাকা শুল্ক প্রহরী মাইনুলের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয় শিক্ষার্থীদের।

একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে টিকিট না ছিড়ে তা পকেটে ঢুকাতে দেখেন কাউন্টার স্টাফদের। এই বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করতে করতে বন্দর ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে একটি রুমে আটকে রেখে মারধর ও কানধরে উঠবস করায়।

বিষয়টি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা টের পেয়ে রাত ১০টার দিকে নদী বন্দরে এসে প্রতিবাদ জানায়।

মারধরে আহত রাকিব বলেন, আমি ঢাকায় যাওয়ার জন্য বরিশাল নদী বন্দরে এসেছিলাম। আমাকে এগিয়ে দিতে আমার তিন বন্ধু এসেছিল। এসময় কাউন্টারের লোকজন টিকিট না ছিড়ে তা পকেটে ঢুকাচ্ছিলো। প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের মারধর করে ও কান ধরে উঠবস করায়। বিষয়টি সহপাঠীদের জানালে তারা এসেও এর প্রতিবাদ জানায়।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, আমরা তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্ত স্টাফদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছি। এর মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমরা পুনরায় আন্দোলনে যাবো।

শুল্ক প্রহরী মাইনুল ইসলাম বলেন, আমি গিয়ে দেখি কাউন্টারের স্টাফ জাকিরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মারামারি চলছে। এরপর সবাইকে নিয়ে উপরে যাই। পরে ওদের বুঝিয়ে আমি পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার সঙ্গে কারো ঝামেলা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শিক্ষার্থীরা প্রথমে নদী বন্দর ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ করে, পরে বন্দর ভবনে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে।

বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি, ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, আমরা কথা বলেছি নদী বন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে।

তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নদী বন্দরে প্রবেশ করার সময় আইডি কার্ড দেখালে তারা ফ্রিতে ঢুকতে পারবেন। তাছাড়া যে ঘটনা ঘটেছে তাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নদী বন্দর কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী বন্দরের স্টাফরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কটুক্তি করেছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, একটি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। এ নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, বিষয়টি সমাধান হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.