
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। আজ একই অবস্থা শুরু হয়েছে। আজকে পত্রিকায় দেখলাম মা তার সন্তানকে খেতে দিতে না পারার জন্য সন্তানের মুখে বিষ তুলে দিয়ে নিজে মৃত্যুবরণ করেছে। আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল সমাবেশটির আয়োজন করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত অর্জন ধ্বংস করেছে, আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদেরকে পুরোপুরিভাবে ক্রীতদাসে পরিণত করার জন্য সমস্ত কাজ তারা করে চলেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, চাল-ডাল-তেল-লবণ-চিনি- এ জিনিসগুলোর দাম কোথাও এক শ ভাগ, কোথাও তিন শ ভাগ বেড়ে গেছে। গোটা দেশে একটা নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। আপনি যদি দেখেন আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা, রিকশচালকরা যে পরোটা-ভাজি খান, তার দামও বেড়ে গেছে। আগে যে পরোটা ছিল ৫ টাকা, সেই পরোটার দাম ১০ টাকা, যে ভাজির দাম ছিল ৫ টাকা, সেটা হয়েছে ১০ টাকা। আয় কিন্তু বাড়েনি।
তিনি আরো বলেন, সরকারের মন্ত্রী সাহেবরা বলছেন মানুষের আয় বেড়েছে। তারা বলেন যে, মাথাপিছু আয় বেড়ে গেছে। কথাটা ঠিক না। এক হাজার কোটি টাকা আয় যার মাসে, আর ১৫ হাজার টাকা আয় যার মাসে- এটা কি সমান হলো? সরকার জনগণের সঙ্গে রসিকতা করে, মশকরা করে বলছে, জনগণের আয় বাড়ছে, জনগণ ভালো আছে। আমি বলি, এভাবে মাথাপিছু আয়ের এই শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে আপনারা আর কত দিন চলবেন?
নির্বাচন কমিশন আলোচনার নামে নতুন নাটক শুরু করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই নাটকটা হচ্ছে তারা এখন বিভিন্ন পেশার বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। গত পরশু হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা। ৩০ জনকে জানিয়েছিল আমন্ত্রণ, এসেছেন মাত্র ১২ জন। সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, তিনি বলেছেন এই তামাশাগুলো কেন করছেন?
“কারণ এই নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু অবাধ হবে না, যদি সেখানে নিরপেক্ষ সরকার না থাকে নির্বাচনকালীন সময়ে। এটা আমার কথা নয়, এটা একজন শিক্ষকের কথা, শিক্ষাবিদের কথা। তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন, যেকোনো চিন্তাশীল মানুষ, যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা জানেন যে এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে যে একটা জনগণের সরকার। ” বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের সরকার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটা নিরপেক্ষ সরকার করতে হবে। আর নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না। আমরা যেমন চাল-ডাল-নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি, হাটে-বাজারের সর্বত্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, ঠিক তেমনিভাবে আমাদের ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য, আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্য, তার সুচিকিৎসার জন্য, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবার জন্য, আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য, আমাদের কারাগারে বন্দি নেতাদের মুক্ত করবার জন্য আমাদের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
Leave a Reply