কান্না না থামায় যমজ শিশুকে হত্যা মায়ের

খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামে দুই মাস বয়সী যমজ শিশু মনি ও মুক্তা হত্যার ঘটনায় মা কানিজ ফাতেমা কনাকে গ্রেপ্তার করেছে তেরখাদা থানা পুলিশ। আজ শনিবার সকালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তানদের হত্যার কথা স্বীকার করেছেন এই মা।

গতকাল শুক্রবার নিহতদের বাবা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে কনাকে আসামি করে তেরখাদা থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর রাতেই ওই যমজ শিশুর মাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে গতকাল দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কনাকে আটক করে পুলিশ।

শুক্রবার ভোরে কুশলা গ্রামের শেখ খায়রুজ্জামানের ওরফে খায়ের শেখের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে কনার ২ মাস বয়সী দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তেরখাদা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, যমজ শিশু মনি ও মুক্তাকে হত্যা করে তার মা কানিজ ফাতেমা কনা। এরপর মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে বাচ্চা উধাও হওয়ার নাটক সাজান তিনি।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক জানান, বাচ্চা দুটি সবসময় কান্নাকাটি করতো। এ নিয়ে কনা বিরক্ত ছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি স্বামীকে ফোন করে তাদেরকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। স্বামী মাসুম বিল্লাহ ১ মার্চে তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কনার যমজ সন্তান ঘুম থেকে জেগে যায় এবং কান্নাকাটি শুরু করে। তখন দুধ খাইয়ে তাদের ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করেন কনা। কিন্তু তাদের কান্না না থামায় তিনি নাক-মুখ চেপে ধরে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে নিয়ে ফেলে দেন।

এসআই জানান, হত্যার পর কনা নাটক সাজান যে, তিনি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার বিছানা থেকে বাচ্চা দুটি উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক কনার বাবা শেখ খায়রুজ্জামান ও মা শরিফা বেগমকে শনিবার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে কনা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, চার বছর আগে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনি গ্রামের মাসুম বিল্লাহর সঙ্গে কনার বিয়ে হয়। কিন্তু পারিবারিক কলহের কারণে কয়েক মাস ধরে বাবার বাড়িতে ছিলেন তিনি। আর মাসুম বিল্লাহ তার নিজের বাড়িতে থাকতেন এবং একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.