মাত্র একটি ঘর চান মাঈনূর

মাঈনূর বেগম, বয়স ৪০। লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাইনূরের স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১২ বছর আগে। তখন থাকতেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক বছর পর তার বাবা লালমোহনের হাশেম চৌকিদারবাড়ি এলাকায় ৩ শতাংশ জমি কিনে দেন। জমি কেনার পর মারা যান মাঈনূরের বাবাও। পরে ওই জমিতে এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে ঘর তুলেন মাঈনূর বেগম। বাস করছেন বৃদ্ধ মা আর এক মেয়েকে নিয়ে।

কয়েক বছর ধরে মাথা গোঁজার একমাত্র বসত ঘরটি বসবাসের অযাগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি আসলেই পানি পড়ে ঘরের মধ্যে। তখন অন্যের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয় মাঈনূরকে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতা আর এলজিইডির আরইআরএমপি প্রকল্পে কাজ করে সংসার চলে তার।  অর্থাভাবে একমাত্র মেয়ের পড়াশোনাও বন্ধ করে দেয় মাঈনূর।

মাঈনূর জানান, রাস্তার কাজ করে নিজে যা আয় করেন তা দিয়ে তিন বেলা খাবার খান। প্রায় সময় মানুষের সহযোগিতা নিয়ে চলতে হয় তাকে। এর মধ্যে আবার বসতঘরটিও ভেঙে রয়েছে বিগত কয়েক বছর ধরে। টাকার জন্য ঘরটি ঠিকও করতে পারছি না। বৃষ্টি হলে অন্যের ঘরে গিয়ে থাকতে হয়। তাই সরকারের কাছে দাবি নতুন করে একটি ঘরে করে দেওয়ার।

মাঈনূরের মেয়ে সিমা আক্তার জানায়, চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সে পড়ালেখা করেছে উত্তর বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সংসারে অভাবের কারণে তার মা আর তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তি করাননি। সরকারি সহযোগিতা পেলে সে আবার পড়তে চায়।

স্থানীয় সুমন নামের এক ব্যক্তি বলেন, মাঈনূর বেগমের পাশে সব সময় স্থানীয়রা দাঁড়িয়েছেন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে ভেঙে রয়েছে মাঈনূরের বসতঘরটি; যা বর্তমানে প্রায় বসবাস অনুপযোগী। সরকারিভাবে যদি মাঈনূরের জন্য একটি ঘর করে দেওয়া হয়, তাহলে বৃদ্ধ মা আর সন্তানকে নিয়ে একটু শান্তিতে থাকতে পারবে সে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষ বলেন, যেহেতু সে ভূমিহীন নয়, সেজন্য তাকে ঘর দেওয়া যাবে না। তবে তার ঘর মেরামতের জন্য টিনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে তাকে লিখিত আবেদন করতে হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.