ই-কমার্স ব্যবসার নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এলটি অনলাইনের

গ্রাহকের প্রতি আইডির দাম এক হাজার টাকা। আর এক আইডি দিয়ে দিনে বিজ্ঞাপন দেখে পাওয়া যাবে ১২ টাকা। এভাবে যত আইডি তত বিজ্ঞাপন দেখে পাওয়া যাবে টাকা। সেই হিসেবে ১৪ টি আইডি খুললে তাকে দেয়া হয় ‘ওয়ান স্টার’ ১৪৪ টি আইডি খুললে ‘টু স্টার’ এভাবে গ্রাহকে প্রলোভন দেখিয়ে নতুন নতুন আইডি খুলিয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে শুরু প্রতারণা।

বেকারত্বের সুযোগে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের সহজ সরল মানুষদের টার্গেট করে এভাবে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা লুফে নিয়েছে এলটি অনলাইন মার্কেটিং নামের এক প্রতিষ্ঠান।

প্রতারক এই কোম্পানিটি শুরু বিজ্ঞাপন দেখিয়ে গ্রাহককে টাকা দিলেও যখন এই গ্রাহকের প্রদত্ত অর্থ ৪৫ কোটি ছাড়িয়ে যায় তখনই বেরিয়ে আসে কোম্পানিটির আসল চেহারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোম্পানিটি যখন প্রতি এক হাজার টাকা মূল্যে চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার আইডি বিক্রি করে ৪৫ কোটি টাকার বেশি মূলধন লুফে নেবার পর তাদের শেয়ার ও ডিলার বিক্রিসহ গ্রাহকের বিজ্ঞাপন দেখা অর্থ পরিশোধ না করে মোবাইল রিচার্জ ব্যবসার নামে নতুন প্রতারণার ফাঁদ।

প্রতারক এই কোম্পানিটির মুল প্রতারক ঝিনাইদহ জেলার কালিগন্জ এর আড়পাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম যে নিজেকে এ কোম্পানি এমডি পরিচয় দেয় আর চেয়ারম্যান হিসাবে আছে হকার শামিম নামে ঝিনাইদহের আরেক ব্যক্তি।  এছাড়া ঝিনাইদহ বাবুল ও রাজ্জাক এ কোম্পানি দালাল হিসাবে পরিচিত আরো আছে নড়াইল এর হামিম, যশোরের নওয়াপাড়ার তৌহিদ ও চট্টগ্রামের কামরুল ইসলাম রিয়াদ।

এ বিষয় ভুক্তভোগী গ্রাহক শামিম, পলাশ,শাহেদ সহ একাধিক গ্রাহকের সাথে কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের সহজ সরলতার সুযোগ নিয়ে এভাবে আমাদের প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেলো অথচ দেখার কেউ নেই। আমরা আমাদের বিনিয়োকৃত অর্থ ফেরত চাই এবং এই ব্যবসার সাথে জড়িত প্রতারকদের শাস্তি চাই।

শামীম নামের গ্রাহক এই প্রতিনিধিকে বলেন, এরা লোকজন এর টাকা নিয়ে ঝিনাইদহ শপিংমল করার নামে ও এলটি ফিড কারখানায়, ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করার সুযোগ এর নামে প্রায় ২০০০০ গ্রাহক এর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

আরেক গ্রাহক জানান, শুধু খুলনা অঞ্চলে নয় এই চক্রটি এখন সারাদেশে এদের প্রতারণা ব্যবসা চালাতে নতুনভাবে প্রতারণা শুরু করতে নতুন নতুন ব্যবসা আনছে। তাই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এ কোম্পানি সকল গ্রাহক মামলাসহ সংবাদ সম্মেলন মানববন্ধন করার জন্য কাজ করছে। এবং গ্রাহকরা এ সকল প্রতারক দের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলুক শাস্তি দিয়ে সকলের টাকা দ্রুত পরিশোধ করার জন্য সরকার এ সুদৃষ্টি কামনা করেছে ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছে। এ বিষয় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ সকল সদস্য এখন এক মত হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানিটির এমডি খোরশেদ আলমের মুঠোফোনে একাধিক বার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শাহনাজ বলেন, এবিষয়ে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি আমরা জানিও না। তবে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দেখবো।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল ই-কমার্স সেল থেকে জানানো হয়, এরকম অভিযোগ আমাদের কাছে নাই। তবে প্রায়ই অভিযোগ আসে। আমরা খোঁজ নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.