ময়লার ট্রাকে বহন করা হয় মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ

শেরপুর পৌরসভায় মরদেহ বহন করার জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে মরদেহ বহনের জন্য ব্যবহার করা হয় পৌরসভার ময়লার ট্রাক। এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।

বৃহস্পতিবার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক তালাপতুফ হোসেন মঞ্জুর মরদেহ ময়লার ট্রাকে করে শহীদ মিনার, জানাজার জন্য পৌর ঈদগাহ মাঠে ও পরে দাফনের জন্য চাপাতলী কবরস্থানে নেয়া হয়। এ দৃশ্য দেখে চরম ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শোনার পর শেরপুরে যে ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রথম হাতে অস্ত্র তুলে নেয় তাদের মধ্যে মঞ্জু অন্যতম। মঞ্জুর ভাই শহীদ বুলবুল মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সন্মুখ সমরে অংশ নিয়ে শহীদ হন। বঙ্গবন্ধু কিলিং এর পর যারা চরম দুর্দিনে রাজপথে সংগ্রাম করেছেন তাদের অন্যতম আমাদের মঞ্জু। বুক ফেঁটে যায়, মঞ্জুর নিজের কোন থাকার জায়গা ছিল না। ভাড়া বাসায় থাকতেন। শেষ যাত্রায় তাকে ময়লার গাড়িতে করে কবরস্থানে যেতে হলো। এর চেয়ে কষ্টের কী হতে পারে!’

মুক্তিযুদ্ধের কোম্পানী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় লক্ষ লক্ষ লোক বসবাস করেন। এখানে মরদেহ বহনের জন্য একটি গাড়ি খুবই প্রয়োজন। আমি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করছি তারা যেন খুব দ্রুত মরদেহ বহনের জন্য ব্যবস্থা করেন।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নূরল ইসলাম হিরো বলেন, ‘যে কোন মরদেহ পৌরসভার ময়লা-আবর্জনার গাড়ীতে বহন করা হলে আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে লজ্জা পাই। আমি অনুরোধ করবো পৌর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’

আবুল হাশেম বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে পৌর কর্তৃপক্ষ বাড়ির নকশা ও প্ল্যান পাশ করার সময় ৩ হাজার করে টাকা নিচ্ছেন। এ টাকা মরদেহ বহনের জন্য গাড়ি কেনা হবে বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু এখনও কেনা হয়নি।

শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন বলেন, আমাদের তহবিলে ২২ লাখ টাকা জমা হয়েছে। মরদেহ বহনের ব্যবস্থা করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি এ সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারবো।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.