
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া এসব তথ্য জানান।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, বহিস্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, বহিস্কৃত সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, বহিস্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিস্কৃত উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল, বহিস্কৃত সদস্য মুনতাসির আল জেমি, বহিস্কৃত সদস্য মুজাহিদুর রহমান, বহিস্কৃত সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা, বহিস্কৃত সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম, শামীম বিল্লাহ, মাজেদুল ইসলাম, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মাহমুদুল জিসান, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। এরা সবাই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়া মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ এবং মাহামুদ সেতুকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। এদের নাম এজাহারে ছিল না।
বুয়েট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে যাদের যাবজ্জীবনে রায় এসেছে: বুয়েট ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, মোয়াজ আবু হোরায়রা, আকাশ হোসেন, আইন বিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না। এদের মধ্যে অমিত ও মুন্নার নাম হত্যা মামলা এজাহারে উল্লেখ ছিল না। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড হবে তাদের।
আবরার হত্যাকাণ্ডের এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন তিন জন। তারা হলেন— এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মাহমুদুল জিসান এবং মুজতবা রাফিদ।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ৬ ঘণ্টা নির্যাতনের পর মারা গেলে হলের দোতলা ও নিচতলার মাঝামাঝি সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয় আবরারের লাশ। সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়ে এ দৃশ্য। শনাক্ত করা হয় আসামিদের। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক আদালতে জানান, মাথা, বুকসহ পুরো শরীরে হাতুড়ি, ক্রিকেট স্টাম্প ও স্কিপিং রোপের নির্মম আঘাতের কারণেই মারা যান আবরার।
ঘটনার পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। মোট আসামির মধ্যে ২২ জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়। পলাতক আছে তিনজন।
বিচার চলাকালে ৬০ সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হয়।
Leave a Reply