পাকিস্তানের চলন্ত ট্রেন থামিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

ঢাকাঃ টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলে যাওয়া পাকিস্তানকে অবশেষে থামতে হলো। একমাত্র অপরাজিত দল হিসেবে সেমিফাইনালে ওঠা বাবর আজমদের হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রাখল অস্ট্রেলিয়া।

দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাকিস্তানের দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেটের জয় তুলে অস্ট্রেলিয়া। মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের শেষের ঝড়ে ১ ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে দলটি।

এর মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হলো এবার নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। রবিবার নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া শিরোপার জন্য লড়বে। দুই দলের কোনোটিই এই সংস্করণে আগে বিশ্বকাপ জেতেনি।

বুধবার প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখে কিউইরা। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে কেন উইলিয়ামসনরা। আর অস্ট্রেলিয়া এ নিয়ে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে। ২০১০ সালে ফাইনালে উঠলেও ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল ওয়ানডের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এদিন একপর্যায়ে খাদের কিনারে ছিল অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের তৃতীয় বলেই অ্যারন ফিঞ্চকে (০) ফিরিয়ে অজিদের চেপে ধরেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। সেই চাপ দূর হয় ডেভিড ওয়ার্নের ব্যাট। তবে এই বাঁহাতি ১১তম ওভারের প্রথম বলে ৩০ বলে ৪৯ রান করে ফেরেন।

শাবাদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হন ওয়ার্নার। যদিও রিপ্লেতে দেখা যায় বল তার ব্যাটেই লাগেনি! মিচেল মার্শ (২২ বলে ২৮) ও স্টিভেন স্মিথ (৬ বলে ৫) ফিরেছিলেন তার আগে। ওয়ার্নার ফেরায় ৮৯ রানে ৪ উইকেট হারায় অজিরা।

এরপর আর ৭ রান যোগ হতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১০ বলে ৭)। ওয়ার্নারের মতো মার্শ, স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েলের উইকেটও নেন শাদাব।

দল যখন প্রবল চাপে, ঠিক সেই সময় ৪১ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮১ রানের জুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ওয়েড ও স্টয়নিস। ওয়েড ১৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৪১ রান করেন। স্টয়নিস ৩১ বলে অপরাজিত ৪০ রান করেন ২টি করে চার ও ছক্কায়।

শেষ ১২ বলে ২২ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় অজিদের সামনে। যা শাহিনের করা ১৯তম ওভারেই তুলে ফেলে দলটি। ওভারের তৃতীয় বলে ওয়েডের ক্যাচ ছাড়েন হাসান আলি। পরের তিন বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন ওয়েড। ম্যাচসেরাও তিনি।

শাদাব দারুণ বোলিংয়ে ২৬ রানে ৪ উইকেট নিলেও পরাজিত দলে থেকে যান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামানের ব্যাটে ভর করে ৪ উইকেটে ১৭৬ রানের পুঁজি গড়ে। রিজওয়ান ৫২ বলে ৬৭ রান করেন ৩ চার ও ৪ ছক্কায়। শেষ দিকে ঝড় তুলে ৩২ বলে অপরাজিত ৫৫ রান করেন তিন নম্বরে খেলতে নামা ফখর জামান। তার ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ৪ ছক্কা।

টানা পাঁচটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে বিশ্বকাপের মঞ্চে গেছে অস্ট্রেলিয়া। আগস্টে বাংলাদেশ সফরে এসেও পাঁচ ম্যাচের সিরিজ হারে তারা। এর মধ্যে এক ম্যাচে ৬২ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জাও আছে। সেই দলটিই এখন শিরোপা থেকে আর একধাপ দূরে।

প্রসঙ্গেক্রমে কিউদের কথাও আসে। অস্ট্রেলিয়ার পর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারায় বাংলাদেশ। অবশ্য বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কাউকে বাংলাদেশে পাঠায়নি তারা। অস্ট্রেলিয়ারও প্রথমসারির বেশ কিছু তারকা অস্ট্রেলিয়ায় আসেনি।

এরপরও বলতেই হয়, বাংলাদেশে এসে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে যাওয়া দুই দলের যেকোনো একটির হাতেই ট্রফি ওঠার অপেক্ষা।

আমাদের বাণী/বাংলাদেশ/১২/১১/২০২১  

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.