ভোটে জিতলে ইসলামি আইনে আমার ইউনিয়ন চলবে: নৌকার প্রার্থী

পটুয়াখালীঃ আমরা খাঁটি মুসলমান, আমাদের ইমান আছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আমি এখান থেকে ওয়াদা দিয়ে গেলাম ইসলামি আইনে এই মাধবখালী ইউনিয়ন চলবে ইনশাল্লাহ।’

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর এমন বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর ঢাকা থেকে এলাকায় ফিরে গত বুধবার স্থানীয় কাঁঠালতলী হাসপাতালের সামনে এক পথসভায় মাধবখালী ই্উনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মো. মিজানুর রহমান লাভলু তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তার এই বক্তব্য নিয়ে সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে।

ইউপি নির্বাচন

মাধবখালীর চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেষ্টা করছেন। সেখানে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী মো. মিজানুর রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেয়ার শামিল। আমরা সব ধর্মের মানুষ মিলে মিশে বসবাস করে আসছি। এখানে এমন বক্তব্য আওয়ামী লীগের একজন প্রার্থীর মুখে শোভা পায় না।’

এ বিষয়ে মিজানুর রহমান লাভলু বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার জন্য এমন বক্তব্য দিইনি। আসলে আমি আমার বক্তব্যে যা বলতে চেয়েছি। তা হলো আমরা মুসলমান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারলে মিথ্যা, দুর্নীতি পরিহার করে সত্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবো। নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্য প্রার্থীরা আমার বক্তব্যের অংশ বিশেষ কেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। তারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এলাকায় প্রচারণাও শুরু করেছেন।’

মাধবখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহসভাপতি আব্দুল মালেক আকন বলেন, ‘ইসলামি আইনে ইউপি চালানোর বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি।’ তিনি এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘বক্তব্যটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।’ নৌকার প্রার্থী হিসেবে মিজানুর রহমান এমন বক্তব্য দিতে পারেন না।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন জুয়েল বেপারী বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এখানে সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে বসবাস করে। ইসলামি আইনে মাধবখালী ইউনিয়ন চলবে-এ রকম বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। তিনি হয়তো আবেগে কথাটি বলে ফেলেছেন।

তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বরের ইউপি নির্বাচনে মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এতে আওয়ামী লীগের ২৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী আবেদন করেছিলেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠায় উপজেলা আওয়ামী লীগ। তাদের মধ্য থেকে ৬ জনের নাম চূড়ান্ত করে নৌকা প্রতীক দেয় মনোনয়ন বোর্ড। তাঁরা হলেন, মাধবখালীতে কাজী মো. মিজানুর রহমান লাভলু, মির্জাগঞ্জে অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম লিটন সিকদার, দেউলী সুবিদখালীতে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন খান, আমড়াগাছিয়ায় মো. সুলতান আহম্মেদ, কাকড়াবুনিয়ায় মো. মাহাবুব আলম স্বপন ও মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নে মো. গোলাম সরোয়ার কিছলু।

মনোনয়ন বঞ্চিত অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন।

আমাদের বাণী/বাংলাদেশ/০২/১১/২০২১ 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.