তরুণীকে আটকে ৩ দিন, তাকে ছেড়ে কিশোরীকে ৫ দিন ধর্ষণ

প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনাঃ জেলার মদনে সুমন মিয়া (৩৫) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে এক তরুণী (২৬) ও অন্য এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পৃথক দুই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত সুমন মিয়া মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা সাহের উদ্দিনের ছেলে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ৯ দিন পরও এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। থানায় অভিযোগ করার পরও আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে ভুক্তভোগী দুই পরিবার।

পুলিশ, ভুক্তভোগী দুই পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই সন্তানের জনক সুমন মিয়া। গত ১৭ অক্টোবর উপজেলার এক তরুণীকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে নিজবাড়িতে নিয়ে আসে। তাকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে ২১ অক্টোবর কৌশলে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ওই তরুণী ২৬ অক্টোবর সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে মদন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে ওই তরুণীকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ওইদিনই (২১ অক্টোবর) অন্য এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে বাড়ি নিয়ে ধর্ষণ করে সুমন। ওই ছাত্রীর বাবা ২২ অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর স্থানীয় মাতব্বররা কয়েক দফা সালিশ বৈঠক করেন। পরে ২৫ অক্টোবর অভিযুক্ত সুমন মিয়ার কাছ থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে নিজ পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সুমন আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। তিন দিন তার বাড়িতে আটকে রেখে আমাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখন কাবিনের মাধ্যমে বিয়ে করবে বলে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাপ দিচ্ছে সুমন ও তার পরিবারের লোকজন। আমি এর বিচার চাই।

অন্য স্কুলছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে রাতে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সুমন মিয়া। পরদিনই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমার মেয়েকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে সে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পাঁচদিন পর স্থানীয় মাতব্বররা আমার মেয়েকে বাড়িতে দিয়ে যান। লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারছি না। সুমন ও তার লোকজন আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ভয়ে মেয়েকে তার নানার বাড়িতে রেখে এসেছি। আমি এর বিচার দাবি করছি। বিচার না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না আমার।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোহেল চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অপহরণ করায় স্কুলছাত্রীর বাবা সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় মাতব্বররা সুমন মিয়ার কাছ থেকে পাঁচদিন পর স্কুলছাত্রীকে তার নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আরেক নারীকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। সেই নারীও তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এটা আইনি বিষয়, তাই বেশি কিছু বলতে চাই না।

অভিযুক্ত সুমনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার বড় ভাই সুজন মিয়া জানান, স্কুলছাত্রীকে মাতব্বররা তার পরিবারের লোকজনের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। অন্য মেয়েটি এখনও আছে। থানায় দেওয়া অভিযোগ দুটি মীমাংসা করার চেষ্টা করছি।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবার চাইলে তাদের সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে।

আমাদের বাণী/বাংলাদেশ/০১/১১/২০২১

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.