
মেহেরপুরঃ জেলায় বড়ছেলে ও নাতীর অত্যাচার, নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন চলাফেরায় অক্ষম নাজেরা বেগম (৬৭) নামের এক নারী।
আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বড় ছেলে সামসুল আলম পিন্টু ও বড় ছেলের সন্তান সালেহিন আলম অংকুরের নামে মামলাটি দাখিল করেন। অভিযোগকারী ওই বৃদ্ধ নারী মেহেরপুর শহরের ২নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী।
আর্জিতে নাজেরা বেগমের অভিযোগ, আমি একজন বয়স্ক ও চলচলে অক্ষম বিধবা নারী। আমার বড় ছেলে সামসুল আলম পিন্টু ও সালেহিন আলম অংকুর আমার সম্পত্তি মর্গেজ রেখে রুপালী ব্যাংক মেহেরপুর শাখায় ৫ লক্ষ টাকা ঋণ করে। ঋণ নিলেও টাকা পরিশোধ না করে আমাকে রেখে অন্য জায়গায় বসবাস করতে থাকে। ব্যাংকের চাপাচাপিতে ওই ঋণের টাকা সুদসহ মোট ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে জমি রক্ষা করেছি। এরপরেও বড় ছেলে ও তার ছেলেসহ বহিরাগত কিছু লোক নিয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। ইতোপুর্বে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলাম। সাধারণ ডায়েরী করায় তারা কয়েক মাস চুপ ছিল।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়েছে এরপর। গতকাল শনিবার (৩০ অক্টোবর) আবারও হাতুড়ি লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছে। এসময় নিষেধ করতে গেলে আমাকে হুইল চেয়ার থেকে ফেলে দেয়। হুমকি দিয়ে বলে বাড়ির জমি তাদের নামে লিখে দিতে। নিজেকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করলে আমার অন্যান্য সন্তান ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও জখম করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে।
নাজেরা বেগমের বড় ছেলে পিন্টু বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, টাকা নেবার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে আমার ছেলে টাকা নিয়ে ছিল। আমি টাকা পরিশোধ করার সময় চেয়েছিলাম তারা আমাকে সেই সময় দেয়নি।
নাজেরা বেগম বলেন, আমার চার ছেলে ও দুই মেয়ে। আমার অন্যান্য ছেলেরা দেখভাল করলেও বড় ছেলে পিন্টু দেখাশোনা বা খোঁজ খবর রাখে না। কিন্তু সে আমাকে প্রায়ই নির্যাতন করে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তার জন্যই মামলা করেছি।
নাজেরা বেগমের মেজ ছেলে সামসুজ্জামান রন্টু বলেন, মেহেরপুর শহরে একটি মার্কেট রয়েছে। সেই মার্কেটের জমি মায়ের নামে। সেই জমির কাগজপত্র দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ করেন আমার বড়ভাই পিন্টু। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় সুদসহ ১০ লক্ষ টাকা হয়েছিল এবং খেলাপি হয়ে জমি নিলাম হওয়ার কথা হচ্ছিল। যার কারনে আমরা ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু সে টাকার একটিও টাকাও আমার বড়ভাই সহযোগিতা করেননি। এখন সে আবার ওই জমি জবর দখল নিতে আমাদের ও আমার প্যারালাইজড মাকে মারধর করছে। যার জন্য আমার মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছে। আমরাও এই সমস্যা থেকে মুক্তি চাই।
আমাদের বাণী/বাংলাদেশ/৩১/১১/২০২১
Leave a Reply