জেলেপল্লীতে আগুন, অভিযানে আটক ৪২

ছবিঃ সংগৃহীত

রংপুরে জেলেপল্লীতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি। সোমবার (১৮ অক্টোবর) এ পর্যন্ত ৪২ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। গ্রামটি ঘিরে রেখেছেন পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।

রবিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থানের মধ্যেই ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়ার বাটের হাটে জেলেপল্লীতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর বিকেলে মাঝিপাড়ায় হামলা করে একদল দুর্বৃত্ত। হামলাকারীরা একটি মন্দিরসহ ৬৫টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে রাতে তারা অন্তত ২০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

রবিবার দুপুরের দিকে মাঝিপাড়ার এক তরুণের নামে ফেসবুকে একটি আইডি থেকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণের বসতবাড়ির আশপাশে অবস্থান নেয়। কিন্তু তাতেও রক্ষা হলো না। উত্তেজিত শত শত লোক ওই গ্রামের পাশের বড়করিমপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। জেলেপল্লীতে লাগা আগুনের কয়েকটি ভিডিও মাঝরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায়, ৬৫টি পরিবারের সবাই আশ্রয় নিয়েছে সেখানকার রাধা গোবিন্দ মন্দিরে।

পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান জানান, ভালবাসার প্রস্তাব নামে একটি ফেসবুক আইডির প্রোফাইল ফটোতে কাবা শরীফের ছবি ছিল। সেখানে ওই কমেন্ট করা হয়। তবে এটা ফেক আইডি হবে বলে আমরা ধারণা করছি – নামেই বোঝা যায়। কিন্তু উত্তেজিত জনতা ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে।

স্থানীয় রানা নামে একজন বলেন, পুলিশ অনেক চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এই অগ্নিসংযোগের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

দুর্গাপূজা চলাকালে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে সহিংসতা শুরুর পর গত কয়েকদিনে তা ছড়িয়েছিল চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, ফেনীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। অনেকগুলো মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর হয়।

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনদিনে ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যেই ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে রংপুরে জেলেপল্লীতে হিন্দু বাড়িতে আগুন দেয় একদল দুর্বৃত্ত।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.