
শিক্ষার্থী চড় মারায় এবার রাজধানীর রমনার খ্যাতনামা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে। আজ রবিবার প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভায় এই সহকারী প্রধান শিক্ষককে বরখাস্থ করা হয়।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠানটির স্কুল শাখার নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারায় তাকে আজ গভর্নিং বডির সভায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে অবিভাবকদের কোন অভিযোগ না পেলেও কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে খোলাশা করা হয়নি।
শিক্ষার্থী ও গভর্নিং বডির একাধিক সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী স্কুল ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে যাবার চেষ্টা করলে সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন তাদের বাধা প্রধান করে চড় থাপ্পড় মারেন। পরবর্তী এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর এ খবর শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তারা সড়ক অবরোধ করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন। এর মাঝে শুক্রবার ও শনিবার হওয়ায় আজ রবিবার গভর্নিং বডির সভায় তাকে সাময়িক বরখাস্থ করার সিদ্ধান্ত হয় এবং এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হবে বলে জানা গেছে।
বরখাস্থ হওয়া শিক্ষক নাসির উদ্দিন জানান, গত বৃহস্পতিবার দুই শিক্ষার্থীর কাছে সিগারেট ও দেয়াশলাই পাওয়া যাওয়ায় তাদেরকে ডেকে এনে একাধিকবার অবিভাবকের ফোন নম্বর চাইলে তারা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে মাত্র শাসন করেছি। এক শিক্ষার্থীকে সামান্য একটা চড় মারায় সে কিভাবে অজ্ঞান হয়ে গেল তা আমি বলতে পারব না। শিক্ষার্থীকে শাসন করা তো কোন শিক্ষকের অন্যায় নয়।
তবে এ বিষয়ে ঐ দুই শিক্ষারথীর অবিভাবক এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলতে রাজী হননি।
তবে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্য সারোয়ার বলেন, গভর্নিং বডি যে সিদ্ধান্ত নিছে তা সঠিক সিদ্ধান্ত। একজন শিক্ষার্থী অন্যায় করলে কর্তৃপক্ষকে জানাবে প্রতিষ্ঠান তার বিচার করবে। কিভাবে তিনি তাকে শারীরিক ভাবে মারধর করতে পারে। ঐ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোন মাদক দ্রব্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এমন কিছু পাওয়া যায়নি। ঐ দুই শিক্ষার্থী স্কুল ফাঁকি দিয়ে বাইরে বের হতে চেয়েছিল। অবিভাবকদের কোন অভিযোগ না থাকলেও কেন তাকে বরখাস্থ করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান চাইলে যে কাউকে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বরখাস্থ করতে পারে। যেখানে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিচার দাবি করে সেখানে বরখাস্থ করা অস্বাভাবিক কোন ঘটনা নয়। এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্তে তিনি যদি নির্দোশ প্রমাণিত হন তাহলে তার বিরুদ্ধে বরখাস্থের আদেশ প্রত্যাহার করা হবে। আর যদি তিনি অভিযুক্ত হন তাহলে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে আরও কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
তবে এ বিষয়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হোসেন এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply