
ঢাকাঃ পদ্মাপাড়ের রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর মৌকুরা, চর কাঠুরিয়া, এবং চর আমবাড়িয়ার মানুষের দিন কাটছে দুর্বিষহ অবস্থায়। অনিরাপত্তার মাঝে। চারপাশে অথৈ পানি, মাঝে দীপের মতো ভেসে আছে অঞ্চল তিনটি।
এই ৩টি চরে বাস করছে প্রায় সাড়ে তিনশ পরিবার। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে যেটুকু উঁচু জমি ছিল তা প্লাবিত হয়েছে। একইসঙ্গে অনেকের বাসা-বাড়ির মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। শিশু বাচ্চা ও গবাদী পশু নিয়ে অনেকটা অনাহারে দুর্বিষহ জীবন কাটছে এখানকার মানুষদের। এখনো মেলেনি কোনো সরকারি সহায়তা। কেউ কোনো খোঁজই রাখেনি অসহায়দের।
সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে জলদস্যুদের আতঙ্ক। চরের পুরুষদের রাত জেগে লাঠি হাতে পাহাড়া দিতে হয় তার জানমালের। দুর্গম চর হওয়ায় সেখানে পুলিশের পৌঁছাতেও সময় লেগে যায় অনেক।
চর কাঠুরিয়ার ষাটোর্ধ বারেক মোল্লা জানান, বর্ষা মৌসুম আসলেই ডাকাতের আক্রামণ বাড়ে। এখানে এসে আমাদের গরু ছাগল জোড়পূর্বক নিয়ে যায়। অনেক সময় ঘরে ডুকে চাল ডাল এমনকি টাকা পয়সাও নিয়ে যায়।
চরের বাসিন্দা স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘ডাকাতদের ভয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হয়। আমাদের গরু ছাগল নিয়ে যায়। আমরা ভয়ে থাকি ইজ্জতের। গরু ছাগল দিতে রাজি না হলে মারধর তো করেই আবার ইজ্জত নেওয়ারও ভয় দেখায়।’
চর আমবাড়িয়ার বাসিন্দা আলামিন শেখ বলেন, ‘আমাদের এইখানে কোনো পুলিশের টহল নাই। নিজেরাই আমরা পাহারা দেই।’ অন্তত স্পিড বোডে এখানে যেন পুলিশি টহল বাড়ানো হয় সেই দাবি তাদের।
চর মৌকুরার আমিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে দিন পার করতাছি। এখনো কোন ত্রাণ পাইলাম না। কোনো মেম্বার,চেয়ারম্যানও খোজ নিতে আসে নাই।’
চরের আফসার সরদার বলেন, ‘গরু ছাগল নিয়া বিপদে আছি। আমাদের খাবার তো নাই। গরু ছাগলরেও কিছু খাওয়াইতে পারতাছি না।’
চর কাঠুরিয়ার শিল্পী বেগম বলেন, ‘আমরা ঠিকমতন রান্নাবন্না করতে পারতাছি না। চৌকির ওপর উনুন বানাইয়ে রান্না-বান্না করতে হচ্ছে। পদ্মায় ঢেউ থাকায় রাজবাড়ী গিয়ে বাজার করে নিয়ে আসাও সমস্যা।’
আমাদের বাণী/বাংলাদেশ/২৮/০৮/২০২১
Leave a Reply