
শেরপুরঃ জেলায় পৃথক চারটি বজ্রপাতের ঘটনায় দুই কৃষকসহ ৪ জন নিহত হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সদর, নকলা, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছে আরও ৪ জন।
নিহতরা হলেন-সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল খালেকের ছেলে মো. মোস্তফা (৪০), নকলা উপজেলার লাভা গ্রামের মো. বদিউজ্জামানের ছেলে মো. আজিজুল হক (৩৫), শ্রীবরদী উপজেলার মো. আব্দুল হামিদের ছেলে মো. আরমান হোসেন (১৫) ও ঝিনাইগাতী উপজেলার ইছামারিপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. রাসেল মিয়া (১৪)।
আহতরা হলেন-সদর উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের কৃষিশ্রমিক মো. ফজু মিয়ার ছেলে মো. বদু মিয়া (৩৫) ও মৃত জোসনা মিয়ার ছেলে মো. আবু সাঈদ (৩৪) এবং নকলার লাভা গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে বাবু মিয়া (৪৩) ও মোক্তার হোসেনের ছেলে মো. হুমায়ুন ওরফে ফকির (২০)।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১২টার দিকে বৃষ্টিপাতের সময় সদর উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামে মো. ভাসানী মিয়ার কৃষি জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে কৃষিশ্রমিক মোস্তফা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় বদু মিয়া ও আবু সাঈদ গুরুতর আহত হন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে শেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত আবু সাঈদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
শেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. খাইরুল কবীর সুমন বলেন, বজ্রপাতে সদর উপজেলায় একজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। আরও দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এ ছাড়া একইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নকলার লাভা এলাকায় কৃষি জমিতে ধান রোপণের সময় বজ্রপাতের সময় কৃষি শ্রমিক মো. আজিজুল হক, মো. হুমায়ূন ও বাবু মিয়া আহত হন। পরে গুরুতর অবস্থায় আজিজুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, একই সময় শ্রীবরদী উপজেলার গোশাইপুর এলাকায় হাঁটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন কিশোর আরমান হোসেন ও ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা এলাকার কিশোর রাসেল মিয়া।
বজ্রপাতে ৪ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনওয়ারুর রউফ বলেন, বছরের এ সময়টাতে বজ্রপাত বেশি হয়ে থাকে। বজ্রপাত শুরু হলে কোন গাছের নিচে, খোলা মাঠে, গাড়িতে বা কোন ধাতব বস্তুর সংস্পর্শে থাকা যাবে না। ঘরে আশ্রয় নিতে হবে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, বজ্রপাতে আহত রোগীদের বেশির ভাগই স্ট্রোক করে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য খুব বেশি সময় পাওয়া যায়নি। বজ্রপাত যেহেতু প্রকৃতিগত ব্যাপার তাই বৃষ্টিপাতের সময় ঘরের বাইরে গেলে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। নিহত কৃষিশ্রমিকদের সহায়তা করতে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আমাদের বাণী/বাংলাদেশ/১১/০৮/২০২১
Leave a Reply