পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন

কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, আগামী ৩ বা ৪ আগস্ট এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

শনিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৫ তারিখের পর কী হবে সেই সিদ্ধান্ত আমরা দেব। তবে লকডাউন কী পরিসরে থাকবে তা আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবো। চলমান এই লকডাউন কঠোরতম ছিল সে অনুযায়ী আমাদের সবকিছুই বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন তো আর সেটি থাকছে না। এখন স্বল্প পরিসরে খোলা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের শিল্প-কারখানা খোলা হচ্ছে।’

এদিকে রোববার (১ আগস্ট) থেকে গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর গতকাল শুক্রবার থেকেই গ্রাম থেকে মানুষের ঢাকামুখী ঢল নেমেছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সড়ক-মহাসড়কেও যানবাহন চলাচল বেড়েছে। যে যেভাবে পারছেন ঢাকায় ঢুকছেন। অনেককেই দেখা গেছে, কোনো যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটেই ঢাকায় ঢুকছেন।

এরইমধ্যে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন) আগামী ৫ আগস্টের পরে আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুক্রবার (৩০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কয়েকদিন আগেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয় বলে জানান তিনি। অবশ্য এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

এদিকে দেশে করোনায় মৃত্যু যেন লাফিয়ে বাড়ছে। আর লাগামহীনভাবে ছুটছে করোনা শনাক্তের সংখ্যাও। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না সংক্রমণ। চলমান কঠোর বিধিনিষেধেও (লকডাউন) করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। রোগীর চাপে বেসামাল হাসপাতালগুলো। শয্যা ও অক্সিজেন সংকটে রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি চরমে। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার (৩১ জুলাই) সকালেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ৯১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া তথ্য মতে, দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) মারা গেছেন আরও ২১২ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৬৭ জনে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৮৬২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১২ লাখ ৪০ হাজার ১১৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার ৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৭৭।

এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ও সংক্রমণ কমেছে। এ সময় মারা গেছেন আরও ৯ হাজার ৩৩৯ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৮৩ জন। যা গতকালের চেয়ে মৃত্যু এবং আক্রান্ত দুটিই কমেছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় মৃত্যু ৪২ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৭ জন। এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার ৭৭৩ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ কোটি ৮৯ লাখ ৭ হাজার ৪ জন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.