দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে বাংলাদেশে

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয় বাংলাদেশে। ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে বাল্যবিয়ের শিকার নারীর সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ। আর করোনা মহামারির প্রথম এক বছরে বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১৩ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির উজ্জীবন প্রকল্প আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে বিষয়ক ইউএসএআইডির গবেষণার কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, দেশে বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে দেওয়া হয়েছে এমন কিশোর–কিশোরীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ। করোনা পরিস্থিতিতে দেশে বাল্যবিয়ের পরিমাণ বেড়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে দেশের ৮৪টি উপজেলায় ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিয়ে সংঘটিত হয়েছে।

নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর আয় কমে যাওয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকে বাল্যবিয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইউএসএআইডি। তবে সার্বিকভাবে বিগত বছরগুলোতে বাল্যবিয়ে রোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে মনে করছে সংস্থাটি। গবেষণায় দেখা গেছে, গত এক দশকে ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ের হার ৬৬ শতাংশ থেকে কমে ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

‘বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাল্যবিবাহ দূরীকরণে বদ্ধপরিকর। সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি সংস্থা, বেসরকারি খাত এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সবাইকে এটি বাস্তবায়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইউএসএআইডির জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা অফিসের পরিচালক জারসেস সিধওয়া বলেন, বাল্যবিয়ে একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। বাল্যবিয়ের মতো একটি জটিল সমস্যার অবসান ঘটানোর জন্য আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং এ জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে কিশোর–কিশোরী, অভিভাবক, নীতি নির্ধারক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ১০ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রতিনিধি, মহিলা ও শিশু অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরাসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.