
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একমাসের মধ্যে আজ সর্বনিম্ন মৃত্যু হয়েছে। একদিনে এখানে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ( ২৩ জুলাই) সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত সময়ে তাদের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৭ জন ও উপসর্গে ৪ জন মারা গেছেন। এর আগে সবশেষ ২০ জুন এখানে সর্বনিম্ন ১০ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে, ঈদের ছুটিতে রাজশাহীতে করোনা সংক্রমনের হার অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে। জুন মাসে এসে এটি আরো বেড়ে যায়। কোনদিন একটু বেশি আবার কোনদিন একটু কম হলেও এই সংখ্যা যেন কোনভাবেই দশের নিচে নামছেইনা। জুলাই এর শেষ সপ্তাহ থেকে এই সংখ্যা ছিলো উর্দ্ধমুখি। করোনা ইউনিটে যারা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন। সেই তুলনায় করোনা পজিটিভ হয়ে মারা যাবার সংখ্যা অনেক কম।
করোনা সংক্রমনের চরম অবনতির প্রেক্ষিতে রাজশাহী শহরে ১১ জুন বিকেল থেকে শুরু হয় কঠোর লকডাউন। এর পর ১ জুলাই থেকে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন। তার পরও এখানে মৃত্যুর সংখ্যা কম নয়।
রামেক হাসপাতালের দেয়া তথ্যমতে, গত ১৭ জুলাই এখানে মারা যায় ১০ জন। এদের মধ্যে ৩ জন করোনা পজেটিভ ছিলো বাকি ৭ জন মারা যায় উপসর্গে। ১৮ তারিখ এখানে মারা যায় ১২ জন। এদের মধ্যে ৬ জন করোনা পজেটিভ ছিলো বাকি ৬ জন মারা যায় উপসর্গে।
১৯ তারিখ এখানে মারা যায় ১০ জন। এদের মধ্যে ৩ জন করোনা পজেটিভ ছিলো বাকি ৭ জন মারা যায় উপসর্গে। ২০ তারিখ এখানে মারা যায় ১০ জন। এদের মধ্যে ১ জন করোনা পজেটিভ ছিলো বাকি ৯ জন মারা যায় উপসর্গে। এর পর থেকে আবারো বেড়ে যায় মৃত্যু। ২১ জুলাই এখানে মারা যায় ১৩ জন, ২২ তারিখ ১৩ জন, ২৩ তারিখ ১৬ জন, ২৪ জুলাই এখানে মারা যায় ১৮ জন। এভাবেই বেড়ে যায় মৃত্যু।
চলতি মাস জুড়েও মৃত্যুর এ সংখ্যা ২০ এর আশপাশে ছিলো। এক মাসেরও বেশি সময় পর শনিবার মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে ১১জনে নেমেছে। এর আগের দুই দিনই রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২২জন করে মারা যান। আর ২১ জুন এই সংখ্যা ছিলো ১৮ জন।
তবে, শনিবার করোনা ইউনিটে মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখা গেলেও এদের বেশিরভাগই মারা গেছে করোনা পজিটিভ হওয়ার পর। এদিন মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৭জন ও উপসর্গে ৪ জন মারা গেছেন। সেই হিসেবে করোনা পজিটিভে মৃত্যু কমেনি বরং এই ২৪ ঘন্টায় উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু কমেছে।
এদিকে, ঈদের ছুটিতে রাজশাহীতে করোনা সংক্রমনের হার অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, ঈদের আগের দিন ২০ জুলাই রাজশাহীতে মোট ৭১১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮০ জনের করোনা সনাক্ত হয়। সংক্রমনের হার ১১ দশমিক ২৫ ভাগ। ২১ জুলাই রাজশাহীতে মোট ৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়। সংক্রমনের হার ৩৭ দশমিক ৫ ভাগ।
২২ জুলাই রাজশাহীতে মোট ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২২জনের করোনা সনাক্ত হয়। সংক্রমনের হার ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ। ২৩ জুলাই রাজশাহীতে মোট ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯১ জনের করোনা সনাক্ত হয়। সংক্রমনের হার ৬৫ ভাগ।
Leave a Reply