মুনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনার কোন ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ

মোসারাত জাহান মুনিয়া

বহুল আলোচিত মুনিয়ার মৃত্যুর ব্যাপারে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। গুলশান থানা মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আদালতে। আগামী ২৯ জুলাই এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মুনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে তিনি আদতেই অভিযুক্ত নন এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার কোন ঘটনা ঘটেনি।

গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি বাড়িতে মারা যান মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যুর পরতার বোন নুসরাত তানিয়া আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সায়েম সোবহান আনভীর নামে একটি মামলা দায়ের করেন গুলশান থানায়। প্রায় তিন মাস তদন্ত করে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই আত্মহত্যা প্ররোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তর কোন দায় পাওয়া যায়নি।

নুসরাত শুরু থেকে যেসব অভিযোগ করেছিলেন সেগুলো সবই দুরভিসন্ধিমূলক, প্রতারণামূলক এবং বিশেষ ব্যক্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই করেছিলেন বলে পুলিশ তদন্তে রিপোর্টে বলা হয়েছে। নুসরাত এই মামলাকে ব্যবহার করে সরকার এবং বিভিন্ন মহলকে চাপে ফেলার কৌশল গ্রহণ করেছিলেন।

পুলিশ জানায়, এই মামলায় তিনি যে সমস্ত তথ্য উপাত্ত দিয়েছিলেন তার অধিকাংশই অসম্পূর্ণ, মিথ্যা। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকতে হয়। এই তথ্য প্রমাণের মধ্যে রয়েছে, যিনি আত্মহত্যা করেছেন তার সঙ্গে সর্বশেষ কার কথোপকথন হয়েছে, তিনি সরাসরি ওই ব্যক্তির কাছে গিয়েছিলেন কিনা। যার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে তিনি সরাসরি আত্মহত্যাকারীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন কিনা, কথা বলেছিলেন কিনা এবং এমন কোন আলামত যেটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি ওই বিশেষ ব্যক্তির প্ররোচনায় আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু মুনিয়ার মামলা তদন্ত করতে যেয়ে পুলিশ দেখেছে যে, সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার মাস তিনেক সম্পর্ক ছিলই না। বরং মুনিয়ার বোন মুনিয়াকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছিলেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য এবং সে কারণে মুনিয়ার মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছিল।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়েছে, ২৬ এপ্রিল মুনিয়া মারা যাওয়ার পর প্রথম সেখানে আসেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া। নুসরাত তানিয়াকে মুনিয়াই ডেকে নিয়ে আসেন কিন্তু সেই সময় নুসরাত তানিয়া বার বার বিলম্ব করছিলেন। কেন বিলম্ব করেছিলেন সেটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। তাছাড়া, নুসরাত তানিয়া যে সমস্ত অভিযোগ করেছেন সে সমস্ত অভিযোগের কোনো সত্যতা পুলিশি তদন্তে পাওয়া যায়নি। একই সাথে মুনিয়ার বোন যে সমস্ত তথ্য উপাত্ত আলামত দিয়েছেন তার অধিকাংশই মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন হিসেবে প্রমাণিত।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.