
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের প্রভাব পরছে মুন্সীগনঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলাতেও। দেশে প্রতিদিনই সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্যাপক হারে। দেখা যায় মফঃস্বলে প্রধান স্থানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও এলাকার অন্যান্য আনাচেকানাচে তেমন তোয়াক্কা করা হচ্ছেনা করোনার বিধিনিষেধ। দেশে করোনায় যেমন মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে, তেমনি জ্যামিতিক হারে মানুষের কর্মহীন হওয়া এবং কাজ হারানোর ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে।
এমতাবস্থায় উপজেলায় দেখা দিয়েছে অন্য সমস্যা। স্থানীয় এলাকার অন্যদের কাজ না থাকলেও এলাকায় পাড়ায় মহল্লায় ভিক্ষুকদের সংখ্যা এই করোনাকালীন সময়ে যেনো আরো দীর্ঘ হচ্ছে। আগে যারা সবসময় ভিক্ষা করতো তাদের পাশাপাশি এখন লকডাউনে বেড়েছে মৌসুমি ভিক্ষুকের সংখ্যা যেখানে বেশির ভাগই নারী। তারা বেশীরভাগ এখন পাড়ায় মহল্লায় গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন দেদারছে।
কয়েকজন ভিক্ষুকদের সঙ্গে কথা হলে তারা দাবি করে বলেন আগে খাবার তারপর করোনা। মারা যাবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত খাবার ছাড়া চলে না। তাই লকডাউনের আগে আমাদের খাবারে নিশ্চয়তা দিতে হবে। বরিশালের ৭০ বয়সী একজন বৃদ্ধ তিনি বলেন আমি আগে বাসাইল,কেয়াইন ও আব্দুল্লাপুর বাজারে ভিক্ষা করতাম।এখন লকডাউনে দোকান পাট বন্ধ থাকায় এলাকায় গিয়ে ভিক্ষা করি কিন্ত ভিক্ষা পাইনা।
জানাযায় যত মারাত্মক হচ্ছে করোনার ভয়াবহতা ততটাই খাদ্যসংকটে পড়ছেন এইসব ভিক্ষুক।যারা প্রতিদিন ভিবিন্ন বাজার হাটে গিয়ে বেশ টাকা পয়সা ইনকাম করতো তারা এখন প্রায়ই না খেয়েই থাকেন বলে জানান কেরানীগঞ্জ থেকে আসা ভিক্ষুক রংপুরের আনোয়ার হোসেন বলেন ঘরে ছেলে মেয়ে বউ আছে সবাই আমার আশায় থাকে সন্ধ্যায় গেলে টাকা নিয়ে যাবো কিন্ত এখন দুপুর বসে আছি কোনখানে ভিক্ষার জন্য যেতে পারিনি মার্কেট বাজারও বন্ধ।
খোঁজ নিয়ে জানাযায় করোনার এই সর্বাত্মক লকডাউনের আগে একজনের প্রতিদিনের ভিক্ষা করে ইনকাম থাকতো সাতশত টাকা থেকে পাঁচশত টাকা।কিন্ত সহ এই লকডাউনের কারনে কোথায় গিয়ে শান্তি পাননা বলে জানান শাররিক প্রতিবন্ধী জামালপুরের আমান উল্লাহ।
এদিকে পাড়ায় গ্রামে যারা স্থানীয় তাদের অভিযোগ,এই কঠিন লকডাউনে যেখানে আমরা নিজেরাই ছেলে সন্তান নিয়ে চলতে পারিনা সেখানে প্রতিদিন গড়ে বাড়ির দরজায় ৫ থেকে ৭ জন পুরুষ মহিলা ভিক্ষুকে আসতে দেখি, যেখানে আমাদের চলাই দায় সেখানে কোনমতে দিয়ে বিদায় করি।
আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কঠিন লকডাউনের মাঝে ভিক্ষুকরা বলেন,সংসার চালাতে পারছিনা সারাদিনে আগের মতো কেউ ভিক্ষা দেয়না। আগে তো কোরবানির ঈদে মাংস পেতাম এবার মনে হয় কপালে মাংসও জুটবেনা।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন,উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ইতোমধ্যে সরকার ২২ ল ৯৬ হাজার অর্থ এবং ৮ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।এইসব বরাদ্দ স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষদের ঘরে ঘরে পুঁছে দেওয়া হচ্ছে।নিন্ম আয়ের একজন মানুষও যাতে না খেয়ে থাকে আমরা তাদের সে ব্যবস্থা করছি।সেখানে ভিক্ষুকরাও বাদ যাবেনা।
Leave a Reply