করোনা রক্তকোষের বড় পরিবর্তন করে

করোনা ভাইরাস দীর্ঘস্থায়ী ছাপ হিসেবে মানুষের রক্তে বড় ধরণের পরিবর্তন আনে। এর ফলে রক্তকোষে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন ঘটে। সংক্রমণের কয়েক মাস পরে পরীক্ষায় এসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সায়েন্স এলার্ট। এতে বলা হয়, জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর দ্য সায়েন্স অব লাইটের জোচেন গুক বলেন, রক্তকোষে পরিষ্কার এবং দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।

এসব পরিবর্তন ধরা পড়েছে মারাত্মক সংক্রমণের সময়ে এবং সংক্রমণের পরেও। নিজেদের ঘরে তৈরি একটি সিস্টেম ‘রিয়েল-টাইম ডিফরম্যাবিলিটি সাইটোমেট্রি’ (আরটি-ডিসি) ব্যবহার করে বিজ্ঞানী গুক এবং তার অনুসারী গবেষকরা এসব তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন। তারা গবেষণায় রোগীদের রক্ত নিয়ে তাতে পরিবর্তন বিশ্লেষণ করেছেন।

আরটি-ডিসি ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে কয়েক শত রক্তকোষের বিশ্লেষণ সম্ভব। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে রক্তকোষের আকৃতি এবং গাঠনিক কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন আছে কিনা তা ধরা পড়ে। এই প্রযুক্তি সাম্প্রতিক। কিভাবে করোনা ভাইরাস কোষ পর্যায়ে রক্তের ওপর কি প্রভাব ফেলে তা শনাক্তে এই প্রযুক্তি বড় একটি অগ্রগতি হতে পারে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে রিপোর্ট পাওয়া গেছে যে, টিকা নেয়ার পর অনেক রোগীর হার্টে প্রদাহ দেখা দিচ্ছে। কিছু নারীর মাসিক বা ঋতু¯্রাবে অনিয়ম ঘটেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাও গেছেন। ফার্স্ট লেখক মাকেতা কুবানকোভার নেতৃত্বে গবেষকরা লিখেছেন, এর ফলে মৃত্যু বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তারা বলেছেন, এর আগে করোনার কারণে রক্তে পরিবর্তন আসে এবং অঙ্গহানি হওয়ার বিষয়ে করোনা যে ভূমিকা পালন করে তা বলা হয়নি। গবেষণায় ৫৫ জন ব্যক্তির রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন করোনায় মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। ১৪ জন সুস্থ হয়েছেন। ২৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী, যাদের করোনার লক্ষণ দেখা যায়নি। এসব ব্যক্তির শরীর থেকে কমপক্ষে ৪০ লাখ রক্তকোষ নিয়ে আরটি-ডিসি পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, রক্তের লোহিত রক্তকোষ সুস্থ মানুষের রক্তকোষের থেকে অনেক বেশি ভিন্ন আকৃতির। এতে রক্তের গাঠনিক কাঠামোতে বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হয়। ফলে রক্ত সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের সক্ষমতা হারাতে থাকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.