ঠিকাদারের অবহেলায় ভোগান্তিতে ৩০ হাজার মানুষ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে শুরু হয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের ব্যস্ততম মঙ্গলেরগাঁও বটতলা বাজার থেকে পাঁচানী ও শম্ভুপুরাগামী প্রায় ৭ কিলোমিটারের সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে খানা খন্দে ভরে গেছে। ফলে ওই সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয় হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে ওই এলাকার ২০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ও শম্ভুপুরা ইউনিয়নের এ সড়কের আশে পাশে রয়েছে তাহেরপুর হাজী লাল মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, পিরোজপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র দূর্গাপ্রসাদ আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাজিরগাঁও হাজী তমিজ উদ্দিন মাদ্রাসা, চৌধুরীগাঁও সরকারী প্রাথমিক ও চৌধুরীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, হোসেনপুর কলেজ, হোসেনপুর এসপি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, হোসেনপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, হোসেনপুর ভূমি অফিস, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদসহ প্রায় ২০টি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও এ সড়ক ব্যবহার করে উপজেলা পরিষদ, বিভিন্ন শিল্পকারখানার কর্মরত শ্রমিক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সরকারি চাকুরিজীবি ও ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষের চলাচল। এ সড়কে আসা যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

সড়কের বেহাল অবস্থায় সংস্কারের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নের আরটিআইটি প্রকল্পে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দরপত্র আহবানের পর ২০১৯ সালে শেষের দিকে দুটি সড়কের নারায়ণগঞ্জ জেলা এলজিইডির মাধ্যমে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ডলি কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজের কার্যাদেশ পায়। পরবর্তীতে তারা তালতলা থেকে নয়াগাঁও ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী পর্যন্ত কাজ শেষ করলেও মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা পর্যন্ত কাজে অবহেলা ও তালবাহানা করছে বলে অভিযোগ উঠে। এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কটি সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে খোঁড়াখুড়ি করে ফেলে রাখেন। ফলে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে বা ছোট ছোট যানবাহন ব্যবহার করে চলাচল করতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় সড়কটি।

চৌধুরী গাঁও এলাকার পীর মোহাম্মদ জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারণে প্রতিদিন ৩০ হাজার মানুষের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কটি পুরোপুরি চলাচল অনুপযোগী হয়ে মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তাটি সংস্কারের মাধ্যমে ভোগান্তি লাঘবে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ডলি কনস্ট্রাকশন ঠিকাদার নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টার পরও তাকে পাওয়া যায়নি।

সোনারগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী আরজুরুল হক জানান, কার্যাদেশে ২০২২ সালে মধ্যভাগে এ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৭-৮ শতাংশ কাজ শেষ করেছেন। কাজের ধীরগতির কারনে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। এ কারণে এ প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে নতুন করে ইজারার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা এলজিইডিকে কয়েকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.