
করোনার থাবায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহী অঞ্চল। কোনভাবেই করোনার বিস্তার থামানো যাচ্ছে না। বিভাগে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ জন রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই।
এদিকে সর্বশেষ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আরও আটজন মারা গেছেন। এরমধ্যে চারজন মারা গেছেন করোনায়। অন্য চারজনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে রামেকেই গত ১০ দিনে মৃত্যু হলো ১০১ জনের। রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ সাইফুল ফেরদৌস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় করোনায় মারা গেছেন আরও ৩ জন।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আটজন মারা গেছেন। এদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণে। বাকি চারজনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে। মারা যাওয়া আটজনের পাঁচজনই করোনার নতুন হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। অন্য তিনজন রাজশাহীর বাসিন্দা। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ২৯ নম্বরে মারা গেছেন ছয়জন। এছাড়া ৩৯ নম্বর ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ডাঃ সাইফুল ফেরদৌস আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৬ জন। এরমধ্যে ১০ জন রাজশাহীর, পাঁচজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এবং একজন নওগাঁর বাসিন্দা। এ পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ২২৪ জন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছেন ১৬ জন।
এর আগে গত ২৪ মে ১০ জন, ২৫ মে চারজন, ২৬ মে চারজন, ২৭ মে চারজন, ২৮ মে ৯ জন, ৩০ মে ১২ জন, ৩১ মে চারজন, ১ জুন সাতজন, ২ জুন সাতজন, ৩ জুন ৯ জন এবং ৪ জুন সর্বোচ্চ ১৬ জন মারা গেছেন।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে চাঁপাইবাবগঞ্জে চলছে দুই সপ্তাহের আঞ্চলিক লকডাউন। সেই জেলায় করোনার ভারতীয় ধরনও শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে ঝুঁকিতে থাকা নওগাঁতেও আঞ্চলিক লকডাউন দেয়া হয়েছে। রাজশাহীতে চলাচলের ওপর আরোপ করা হয়েছে নতুন বিধিনিষেধ। প্রশাসনের নির্দেশে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে নগরীতে দোকানপাট বন্ধ করা হচ্ছে। তারপরও রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁয় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। সংক্রমণ বাড়ছেই।
এসব জেলার রোগীরা চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ছুটে আসছেন। কিন্তু শয্যা সঙ্কটে সব রোগীকে ভর্তি নিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুধু অক্সিজেনের স্যাচুরেশন যাদের কমেছে, কেবল তারাই হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন। তারপর এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন রোগী মারা যাচ্ছেন।
রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিন এত বিপুল পরিমাণ রোগীর চিকিৎসা দেয়াটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার জন্য রোগীদের জায়গা সঙ্কুুলানই একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। সংক্রমণ না কমলে কয়েকদিনের মধ্যে এ সমস্যা প্রকট হতে পারে। এ নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। সমস্যার সমাধান কীভাবে হতে পারে, তা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তারা।
উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ রামেক হাসপাতালে মোট শয্যার সংখ্যা এক হাজার ২০০টি। এরমধ্যে ২৩২টি শয্যা করা হয়েছে শুধুমাত্র কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায়। এ জন্য বার্ন ইউনিটসহ কয়েকটি ওয়ার্ডকে করোনা ইউনিট করা হয়েছে। তারপরও জায়গা সঙ্কুলান সম্ভব হচ্ছে না। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) শয্যার জন্য রোগীদের মাঝে হাহাকার দেখা দিয়েছে। মাত্র ১৫টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে রামেক হাসপাতালে। আইসিইউ না পেয়ে রোগীরা মারা যাচ্ছেন।
এদিকে রামেক হাসপাতালে জায়গা শেষ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সদর হাসপাতাল চালুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। শীঘ্রই এই হাসপাতালটি এবার চালু হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক শামীম ইয়াজদানী বলেন, রামেক হাসপাতাল ছাড়া রাজশাহীতে আর কোন হাসপাতালের ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইন নেই। থাকলে সেটাকে করোনার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেত। তাই সব রোগীর চাপ রামেক হাসপাতালে। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের রোগীরা এখানে আসছেন চিকিৎসা নিতে। এখন জায়গা সঙ্কুলানই বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে।
তিনি জানান, রাজশাহী সদর হাসপাতালটি চালু করা গেলে রামেক হাসপাতালের কয়েকটি ওয়ার্ড সেখানে স্থানান্তর করা যাবে। তাহলে রামেক হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড বাড়ানো যাবে। সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইন নেই বলে সেখানে করোনার চিকিৎসা হবে না। তিনি আরও জানান, রামেক হাসপাতালে কোভিডের চিকিৎসায় চিকিৎসকেরও সঙ্কট আছে। তাদের চাহিদার ভিত্তিতে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর ১৫ জন চিকিৎসককে এখানে দিয়েছেন। তবে তারা এখনও আগের কর্মস্থলে আছেন। দ্রুত হয়ত তারা চলে আসবেন। কিন্তু নার্সের সঙ্কটের সমাধান হচ্ছে না।
এদিকে রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৮৮ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ১৩৩ জনের করোনা ধরা পড়েছে রাজশাহী জেলায়। এছাড়া বিভাগে করোনার হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরও ১০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগের আট জেলায় মোট করোনা সংক্রমণ দাঁড়াল ৩৭ হাজার ৩২১ এ। শনিবার দুপুরের দিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডাঃ নাজমা আক্তার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় ৫৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে এখনও সর্বোচ্চ ৩১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বগুড়ায়। এছাড়া রাজশাহীতে ৯৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫১, নওগাঁয় ৪৫, নাটোরে ২৭, সিরাজগঞ্জে ২৪, পাবনায় ২২ এবং জয়পুরহাটে ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনায়।
স্টাফ রিপোর্টার জানান, দিনাজপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত তিনদিনে জেলায় মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী দুই-একদিনের মধ্যে কিছু উপজেলায় লকডাউন ঘোষণার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। জানা যায়, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০০ জনে। এরপর প্রায় দেড় মাস ধরে জেলায় করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। গত ২০ মার্চ জেলায় করোনায় একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। চলতি জুন মাসের প্রথম থেকে জেলায় আশঙ্কাজনক হারে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ জুন জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। ৩ জুন জেলায় করোনায় দুইজন ও ৪ জুন তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় ১শ’ ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ২৩ জনের নমুনার ফল করোনা পজিটিভ আসে। এরমধ্যে শুধুমাত্র দিনাজপুর সদর উপজেলায় ১৫ জন রয়েছেন।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ উর্ধমুখী। বিশেষ করে দিনাজপুর সদর উপজেলায়, সংক্রমণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা করোনা কমিটির বৈঠক হয়েছে। আমরা কয়েকটি উপজেলাকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘোষণাপত্র জারি করা হবে। উল্লেখ্য, দিনাজপুর জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১শ’ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নওগাঁয় ১ জনের মৃত্যু ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত নওগাঁ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির বাড়ি রানীনগর উপজেলায়। এ নিয়ে করোনায় জেলায় সর্বমোট মৃত্যু হলো ৪৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ২৩৬৫ জন। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কন্ট্রোল রুমের বরাত দিয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মঞ্জুর এ মোরশেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেরপুরে করোনায় মারা গেলেন আরও একজন ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে করোনা আক্রান্ত হয়ে আক্কাস আলী (৬৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। আক্কাস শহরের নবীনগর মহল্লার গাড়িয়ালবাড়ির গয়া শেখের ছেলে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মারা গেলেন ১৬ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডাঃ একেএম আনওয়ারুর রউফ।
জানা যায়, সর্দি-কাশিসহ করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত ৩ জুন বৃহস্পতিবার আক্কাস আলী জেলা সদর হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেদিন র্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্টে তার করোনা পজিটিভ এলেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়ি চলে যান। পরদিন শুক্রবার অবস্থার অবনতি হলে তিনি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বেলা ১২টা ১০ মিনিটে মারা যান আক্কাস আলী।
এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯১ জন, যা নমুনা পরীক্ষার ৬.৯৭ ভাগ। এই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৭১৬ জন, যা মোট আক্রান্তের ৯১.৮৭ ভাগ। আর ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট আক্রান্তের ১.৯ ভাগ। বর্তমানে জেলায় ৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৩৯৪ জনের। এরমধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১১ হাজার ৩৪৭ জনের। রিপোর্ট অপেক্ষমান রয়েছে ৪৭ জনের। এছাড়া জেলায় মোট টিকা নিয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৫০ জন। এরমধ্যে কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করেছেন ৩৩ হাজার ৬৬০ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৯০ জন।
নবাবগঞ্জে ১০ জনের দেহে ভারতীয় ধরন শনাক্ত ॥ সংবাদদাতা জানান, ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১০ জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ১০ জনই পেশায় শ্রমিক। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নবাবগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজে এসেছিলেন।
আজ শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী ওই দশজন শ্রমিকের কাজ করেন। গত মাসের ১৮ তারিখে তারা সকলে ট্রাকযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজের জন্য নবাবগঞ্জে এসেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ২৬ মে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য তাদের ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এখনও তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তাদের সকলের শরীরে করোনা ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেন ডাঃ শহিদুল।
বাগেরহাটে ৩ জনের মৃত্যু ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, বাগেরহাটে করোনা আক্রান্ত হয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলার ভাষান্দল গ্রামের আব্দুল ওহাব শেখ (৬৫) এবং বহরবুনিয়া ইউনিয়নের বহরবুনিয়া গ্রামের মিজানুর আকন (৪৫) শনিবার দুপুরের দিকে মারা যান। অপর দিকে শুক্রবার রাতে শরণখোলা উপজেলার নুর ইসলাম হাওলাদার (৭০) মারা যান। এদের মধ্যে ভাষান্দল গ্রামের আব্দুল ওহাব শেখ ও রাজাপুর গ্রামের নুর ইসলাম হাওলাদার নিজ বাড়িতে এবং মিজানুর আকন খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শনিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এদের তিনজনের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুফতী কামাল হোসেন বলেন, গত ২ জুন আব্দুল ওহাব শেখের করোনা শনাক্ত হয়। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় আমরা তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করি। কিন্তু তিনি খুলনায় না যেয়ে বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অপর দিকে বহরবুনিয়া গ্রামের মিজানুর আকন গত ২৯ মে থেকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ অবস্থায় শনিবার তারা মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা বেগম বলেন, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নুর ইসলাম হাওলাদার নামের এক বৃদ্ধ ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। পরে শুক্রবার রাতে তিনি মারা যান। তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাটে করোনায় আক্রান্তের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। বাগেরহাটে পরীক্ষা অনুযায়ী আক্রান্তের হার এখন প্রায় ২৩ শতাংশ।
Leave a Reply