মংলায় শনাক্তের হার ৭০ শতাংশ

সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা সহ বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন হটস্পট হয়ে উঠছে।

ভারতের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ শনিবার সন্ধ্যে থেকে সাতদিনের বিশেষ লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে।

বাগেরহাটের মংলায় গত কয়েকদিন ধরে সংক্রমণের শতকরা হার ৪০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে উঠানামা করছে, যা নিয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

বিভাগীয় শহর খুলনায় সংক্রমণ পরিস্থিতিও নাজুক হয়ে পড়ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পরীক্ষা অনুপাতে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগী ৭০ শতাংশ হবার ঘটনা অনেককেই চমকে দিয়েছিল।

এবার একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে বাগেরহাটের মংলা উপজেলায়। উপকূলীয় এ জায়গাটিতেও গত কয়েকদিনে পরীক্ষা অনুপাতে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন কে. এম হুমায়ুন কবির বলেন, পুরো বাগেরহাট জেলার পরিস্থিতি নাজুক না হলেও মংলা উপজেলায় সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে।

“মংলা উপজেলায় সংক্রমণ ২৬ তারিখ থেকে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের জেলায় এখন রোগী চিকিৎসাধীন আছে ২৬৪জন। এর মধ্যে ১৬৪ জন মংলা উপজেলায়।,” মি. কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন।

“শনাক্তের হার উঠানামা করছে। প্রথম তিন দিন ছিল ৭০ পার্সেন্ট। গত দুইদিন ছিল ৪০ পার্সেন্ট, আজকে আবার ৭০ পার্সেন্ট।”

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আরেকটি জেলা সাতক্ষীরায় সংক্রমণ রোধ করার জন্য সেখানে লকডাউন আরোপ করেছে প্রশাসন।

গত কিছুদিনের পরিসংখ্যান দেখে স্থানীয় সাংবাদিক এম এম আকরামুল ইসলাম বলছেন, সেখানে শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় সরকারি হাসপাতালে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। কিন্ত তারপরেও সেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন উদ্বেগ নেই বলে উল্লেখ করেন মি. ইসলাম।

চিকিৎসক এবং গবেষকরা মনে করেন যেসব জেলায় রোগী শনাক্তের হার বেশি সেখানে হয়তো ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এর জন্য দায়ী হতে পারে।

গত ১৬ই মে’র পর থেকে ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গোপালগঞ্জ এবং খুলনা থেকে ৫৪টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছে সংক্রামক রোগ বিষয়ক সরকারি প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর।

সে নমুনাগুলোর মধ্যে ৮০ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছে আইইডিসিআর।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, মংলায় সমুদ্র বন্দর এবং ইপিজেড আছে। এসব জায়গায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ কাজ করে। এছাড়া মংলা বন্দরে বিদেশ থেকে জাহাজও আসে।

“বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসতে পারে। ইন্ডিয়া থেকে অনেক নৌযান আসে। বাগেরহাট যদিও সীমান্তবর্তী জেলা নয়, কিন্তু সীমান্তবর্তী জেলার ক্রাইটেরিয়া (বৈশিষ্ট্য) এখানে আছে,” বলছেন সিভিল সার্জন কে এম হুমায়ুন কবির।

তবে এসব কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে কি না সেটি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিদিন যে রিপোর্ট প্রকাশ করে সেখানে দেখা যাচ্ছে দেশ জুড়ে শনাক্তের সংখ্যা এখন ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অথচ তিন সপ্তাহ আগে এটি সাত শতাংশে নেমে এসেছিল। সুত্রঃ বিবিসি বাংলা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.