মা হলেন গণধর্ষণের শিকার কিশোরী

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে গণধর্ষণের শিকার এক কিশোরী (১৩) এবার সন্তান জন্ম দিয়েছে। তবে গণধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর পিতৃ পরিচয় নিয়ে ধো‍ঁয়াসার সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষণকারী ৩ ধর্ষক একই এলাকার স্থানীয় বাবুল মিয়ার ছেলে ফাহিম, আফসার চৌধুরীর ছেলে সামি ও হাসান মিয়ার ছেলে হাবিবুরের বিরুদ্ধে টঙ্গীবাড়ী থানায় গত ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে পৃথক দুটি ধর্ষণের মামলা করে ধর্ষিতার পিতা। ওই মামলায় ২ ধর্ষক সানি (১৭) এবং হাবিবুর রহমান (১৪) মুন্সিগঞ্জ আদালতে আত্নসমর্পণ করলে তাদের জেল হাজাতে প্রেরণ করে আদালত। অপর বখাটে ফাহিম পলাতক রয়েছে।

এদিকে গত ১৬ মে ভুক্তভোগী কিশোরী এক ছেলে সন্তান প্রসব করেছে। তবে সন্তান প্রসবের পরেই ধর্ষকের পরিবার নবজাতকটি হত্যা করতে মরিয়া হয়ে উঠে। ভুক্তভোগী পরিবারটি একেবারে হতদরিদ্র এবং নির্যাতিতার মা না থাকায় বাবা জীবিকার প্রয়োজনে বাহিরে থাকে। আর এ সুযোগে ওই নবজাতক শিশুটিকে মারতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ধর্ষক পরিবার। নির্যাতিতা কিশোরীর বড় ভাই পারভেজ ওই নবজাতককে গভীর পাহাড়ায় রাখাতো। সেই কারনে গত (২৮ মে) শুক্রবার রাত ৮ দিকে চুরির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ভাই পারভেজকে মারধর করে ধর্ষণ মামলার আসামী হাবিবুর এর বাবা হাসান (৫০) মা শাহানাজ বেগম (৪০) ও ফুফা বাচ্চু কোতয়াল (৫৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় তারা পারভেজকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা করে। এতে ফয়সালের গলায় একধিক চিহ্ন দেখা যায়। ঘার মটকে দেওয়ার পর পারভেজের মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পারভেজ বিষ পান করেছে বলে মিথ্যা প্রচরণা চালায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার (১ জুন) ভোরে তার মৃত্যু হয়।

নির্যাতিতার বোন পিংকি বলেন, আমার বোনের বাচ্চা হওয়ার পরেই ওরা বাচ্চাটাকে মেরে ফেলতে চায়। গভীর রাতে আমাদের উঠান দিয়ে মানুষ হাটে মাঝে মাঝে আমাদের দরজায় টোকা দেয়। আমার ভাই পারভেজ বাচ্চাটাকে পাহাড়া দিয়ে রাখতো তাই আমার ভাইকে ওরা মেরে ফেললো।

জানাগেছে, উপজেলার উত্তর পাইকপাড়া গ্রামের ওই কিশোরীর অসুস্থ হওয়ায় অনেক আগেই কিশোরী পরিবারকে ছেড়ে চলে যান। কিশোরী বাবার সাথে উপজেলার উত্তর পাইকপাড়া গ্রামে বসবাস করতেন।

ঐ কিশোরী জানান, প্রায় ১০ মাস আগে একদিন সন্ধ্যায় আমাদের প্রতিবেশী বাবুল মিয়ার ছেলে ফাহিম আমার চাচি রুনু বেগম আমাকে ডাকছে বলে আমাকে আমাদের বাড়ির পাশে পালের বাড়িতে নিয়ে যায়। আমি সেখানে গিয়ে দেখি, আমাদের এলাকার সামি দাড়িয়ে আছে। পরে সামি আমাকে ধরে জোর করে ধর্ষণ করে। এ সময় আমাদের অপর প্রতিবেশী হাবিবুর আসে। সানির পরে হাবিবুর ও ফাহিম আমায় ধর্ষণ করে। সে সময় আমার চিৎকারে এলাকার লোকজন আগাইয়া আসলে আমি তাদের জানালে, এলাকার লোকজন ওদের চর থাপ্পর দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা ওসি হারুন অর রশিদ জানান, ধর্ষিতার ভাইকে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই ঘটনায় শাহনাজ নামের একজনকে আটক করে আজ বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সে আরো জানায় এর আগে ধর্ষনের ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী থানায় পৃথক ২ টি মামলা হয়েছে। ২ ধর্ষক জেল হাজতে আছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.