ঋণের সুদহার আরও বাড়ল

বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর ঋণের সুদহার আরও বাড়ল। এখন থেকে যারা ঋণ নেবেন তাদের আরও বাড়তি সুদ দিতে হবে। বাণিজ্যিক ও শিল্প ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। রপ্তানি ও কৃষিঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদ হবে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

একই সঙ্গে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর আমানতের সুদ বেড়ে হবে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ঋণ বা লিজের সুদ বেড়ে হবে ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার বাড়ায় ব্যাংকগুলো এখন ঋণের সুদহার বাড়াতে পারবে। একই সঙ্গে বাড়বে আমানতের সুদহারও। বাড়তি সুদ ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে আগে বিতরণ করা ঋণের সুদ হার এখন বাড়ানো যাবে না। ঋণ বিতরণের ছয় মাস অতিক্রম হলেই কেবল ওইসব ঋণের সুদহার বাড়ানো যাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঋণের সুদ দফায় দফায় বাড়ানোর কারণে শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে শিল্প টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুদের পাশাপাশি ডলারের দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও পণ্যের দাম চড়া। এসব কারণে খরচ বাড়ছে।

সূত্র জানায়, এই দফায় সব খাতে সুদের হার বাড়ছে দশমিক ২৯ শতাংশ। ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় এবারও ঋণ ও আমানতের সুদহার বাড়ছে। আইএমএফের পরামর্শে সুদের হারকে গত জুলাই থেকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। ফলে এখন সরকারি খাতের ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সঙ্গে নির্ধারিত সুদহারের করিডর যোগ করে ঋণ বা আমানতের সুদ নির্ধারিত হয়। ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো এর ভিত্তিতে ঋণ ও আমানতের দুই খাতের সুদই নির্ধারণ করে। ব্যাংকগুলো কেবল ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে। আমানতের সুদ নির্ধারণ করে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের ওপর ভিত্তি করে। এক্ষেত্রে ঋণ ও আমানতের মধ্যকার সুদহারের যে ব্যবধান ছিল সেটিও তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন ব্যাংকগুলো চাহিদামতো আমানতের সুদ নির্ধারণ করতে পারবে।

নভেম্বরে ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত অক্টোবরে ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ মাসে এ খাতে সুদ বেড়েছে দশমিক ২৯ শতাংশ। সব খাতে ঋণ ও আমানতের সঙ্গে ওই হারে সুদ বাড়াতে পারবে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো। ব্যাংক ঋণের সঙ্গে আরও যোগ করতে পারবে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে তাদের সুদ দাঁড়াবে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগে এ হার ছিল ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ।

এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদ নির্ধারণ করতে পারবে। রপ্তানি ঋণ ও কৃষিভিত্তিক ঋণের সঙ্গে যোগ করতে পারবে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে এ খাতে সুদ হবে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

এদিকে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো ট্রেজারি বিলের সুদের সঙ্গে ঋণ বা লিজের ক্ষেত্রে যোগ করতে পারবে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে তাদের সুদ হবে ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। একই সঙ্গে আমানতের সুদের সঙ্গে যোগ করতে পারবে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে আমানতের সুদ হবে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.