উত্তরবঙ্গে বন্যার শঙ্কা

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে তিস্তা চরের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে নদীর পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা চরের কয়েকশ একর জমির পাট, বাদাম, মরিচ, তিল, ধান বীজতলার খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

গতকাল বিকাল ৩টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, গতকাল সকাল ৯টা থেকে থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার (৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বিকাল ৩টার তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার (৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুদিন ধরে উজানের পানি ও ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সানিয়াজান, সিঙ্গীমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এদিকে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা সিন্দুর্না, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এতে কৃষকের পাট, কুমড়া, মরিচ, বাদাম, তিল, ধান বিজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তিস্তা চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, নদীতে পানিতে ধানের বীজতলা তলিয়ে গিয়ে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বর্ষা মৌসুমে ধান রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

তিস্তার ব্যারাজ এলাকার জেলে আকবার আলী বলেন, ‘গত দুদিন থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে আমার নদীতে মাছ ধরতে পারছি না। আর জালেও মাছও উঠছে না।’

হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের মফিজার রহমান বলেন, ‘হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে চর এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। সেইসঙ্গে প্রচুর ভাঙনেরও শঙ্কা রয়েছে।’

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বিকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.