
দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। আজ বৃহস্পতিবার সোয়া ৬টার দিকে তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছোন। বিমানবন্দরে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জানা গেছে, আজ রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রথমে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন এ কে আব্দুল মোমেন ও সের্গেই লাভরভ। এরপর তাদের নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামসহ আরও কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন তারা। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে লাভরভের।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামীকাল সকাল সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। বিকেলে ঢাকা ছাড়ার আগে তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে সাবেক সোভিয়েত আমলে বাংলাদেশের যেসব শিক্ষার্থী রাশিয়ায় গিয়ে পড়াশোনা করেছেন, তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেবেন।
২০২২ সালের নভেম্বরে ঢাকায় ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সহযোগিতা জোটের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যোগ দেবেন বলে কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি।
লাভরভের ঢাকা সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে কঠিন পরিস্থিতিগুলো সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেন সমস্যার পর থেকে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। খাদ্য, জ্বালানি, সার, নিরাপত্তা, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সমস্যাগুলো তুলে ধরব।’
সূত্র জানায়, দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে ঢাকা-মস্কো সম্পর্ক জোরদার, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রেক্ষাপটে জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের প্রসঙ্গগুলো আসবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সইয়ের অপেক্ষায় থাকা প্রায় ২০টির মতো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সইয়ের অপেক্ষায় থাকা ২০টির মতো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের মধ্যে অন্তত চারটি চুক্তি প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত। এর মধ্যে রয়েছে দুপক্ষের মধ্যে প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত গোপনীয় তথ্য বিনিময়, প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত কারিগরি বিষয়ে মেধাস্বত্ব অধিকার, প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ। জানা গেছে, দুই দেশ বন্দি প্রত্যর্পণ, কারাবন্দিদের হস্তান্তর, মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারসহ অন্তত ১৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক নিয়ে কয়েক বছর ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এগুলো সইয়ের জন্য নানা স্তরে রয়েছে।
Leave a Reply