অনিশ্চয়তার মুখে কোটি শিশুর ভবিষ্যৎ: জাতিসংঘ

অনিশ্চয়তার মুখে কোটি কোটি শিশুর ভবিষ্যৎ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক শিশুকে স্কুল ছেড়ে কাজে নামতে হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রধান গিলবার্ট হুংবো। তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে পৃথিবীজুড়ে যে আগ্রাসন চলছে তার শিকার হতে পারে শিশুরা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে অনেক শিশু যৌন নিপীড়নের শিকারও হতে পারে। এই পরিস্থিতি সামলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

গিলবার্ট বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার খরচ এত বেড়ে গেছে যে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। আমরা যদি এখনই দ্রুত পদক্ষেপ না নেই, তাহলে এই সমস্যা আরও প্রকট হবে।’

২০২০ সালে জাতিসংঘের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বিশ্বজুড়ে শিশুশ্রমের শিকার ১৬ কোটি। হুংবো বলেন, এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আগামী ২০ বছরে এটি আরও বাড়বে।

খাবার ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে অন্য খাতে খরচ কমাচ্ছে পরিবার। পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে একবেলার খাবারও কমাতে হচ্ছে কোনো কোনো পরিবারকে। একটা সময় শুরু হচ্ছে শিশুশ্রম। মা-বাবা বাধ্য হয়ে সন্তানকে কাজে পাঠাচ্ছেন।

কেনিয়ার উপকূলীয় শহর মোমবাসার ১৪ বছরের এক মেয়ে শিশু বিবিসিকে জানায়, তার কাজে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তার মা তিন সন্তানের খাবার ও পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।

মেয়েটি জানায়, অর্থ উপার্জনের জন তার কাপড় পরিষ্কার করতে হচ্ছে, চুল কাটতে হচ্ছে। এমনকি যৌনকর্মেও সম্মতি জানাতে হচ্ছে।

এমন অবস্থায় তার স্কুলে যেতেও অনেক কষ্ট হয়। সে জানায়, মাঝে মাঝে তার এত ক্ষুধা লাগে যে খেতেও পারে না।

তার মা বলেন, নিজের সন্তানকে এমন কিছু করতে বলা সহজ ছিল না। কিন্তু করোনা মহামারির সময় চাকরি হারানোয় তার কিছু করার ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমার জন্য খুবই কষ্টের। আমি চাই আমার সন্তানরা অন্য বাচ্চাদের মতো স্কুলে যাক, ভালো একটা ভবিষ্যৎ গড়ুক। কিন্তু আমি পারছি না। আমার চাকরি নেই।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.