কানাডায় পালানোর সময় পিকে হালদারের দুই বান্ধবী গ্রেপ্তার

পিপলসের ৬৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কানাডায় পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে পিকে হালদারের দুই বান্ধবীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শারমিন আহমেদ (৪২) ও তানিয়া আহমেদ (৩৭)।

র‍্যাব জানিয়েছে, তারা দুজনেই ঋণখেলাপী। পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে ৬৪ কোটি টাকার ঋন নিয়েছিল তারা। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে কানাডায় পালিয়ে যাচ্ছিলো তারা।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে দুই বোনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে পিপলস্ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ছয় হাজার আমানতকারী রয়েছে ও বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীর প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা আটকা পড়েছে। এই অর্থের একটি বড় অংশ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা বিভিন্ন নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। কর্মরত থাকাকালে নিজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

র‍্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা এই খবির উদ্দিনের মেয়ে। কানাডায় বসেই বাবার সহায়তায় শারমিন ৩১ কেটি ও তানিয়া ৩৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাত করেছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপীদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে যারা-যারা উপস্থিত হয়নি তাদের গ্রেপ্তারের জন্য গত ১৯ এপ্রিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয় আদালত। এরই আমরা বাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কারন তারা চলতি বছরের গত ২৮ জুলাই বাংলাদেশে এলেও আজ আবারো গোপনে কানাডার উদ্দেশ্যে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছিল। দেশ ছাড়তে তাদের মালামাল একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেয় তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুই নারীর বাবা তাদের নামে ঋণ নিয়েছেন। তবে সেই টাকা বাবা নয় তারাই ভোগ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের বাবা অসুস্থতাজনিত কারনে জামিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃত দুই বোনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.