
মাত্র কয়েকদিনের ব্যাবধানে তিন শতাধিক গ্রাহকের থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে পল্লী ভিশন নামের এক এনজিও’র চার প্রতারক। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায়।
অভিযুক্তরা হলেন, আনোয়ার হোসেন (৪৫), কিবরিয়া (৪৮), মোমিনা খাতুন (৩০), নাজমুল (২৮) ও বাসার মালিক আবু বকর সিদ্দিক। গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের স্বল্প সুদে মোটা অঙ্কের ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয় হিসেবে এই টাকা হাতিয়ে নেন তারা।
উধাও হওয়ার তিনদিন পর আজ রোববার দুপুরে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ত্রিশাল পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এনজিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা আধাঘন্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অবরোধ থেকে সরে আসেন গ্রাহকরা।
এ বিষয়ে ত্রিশাল থানায় ওই এনজিও’র চার সদস্য ও বাসার মালিকের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ করেন মামুনুর রশিদ নামে প্রতারণার শিকার এক গ্রাহক।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, প্রতারক চক্রটি উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ১০টি ইউনিটে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। প্রতিটি ইউনিটে ৩০ জন থাকার শর্তে প্রত্যেকের কাছে ১ হাজার থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার টাকা পরিমাণ সঞ্চয় সংগ্রহ করে। এভাবে মোট টাকার পরিমাণ প্রায় অর্ধ কোটি ছাড়াবে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
ধানীখোলা ইউনিয়নের মধ্যভাটিপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম স্বপন নামের এক গ্রাহক বলেন, ‘দুই লাখ টাকা ঋণ দেওয়া শর্তে আমার থেকে ২০ হাজার ২০০ টাকা নিয়েছে তারা। আমার পরিচিত আরও ১২ থেকে ১৩ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা নিয়েছে। আমরা গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে এ টাকা তাদের দিয়েছিলাম।’
সদর ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের আনোয়ারুল নামে একজন বলেন, ‘আমি ১০ হাজার ৩২০ টাকা জমা দিয়েছি। আমার গ্রাম থেকেই আরও ২০ থেকে ২৫ জন বিভিন্ন পরিমানে টাকা জমা দিয়েছিল।’
কাঁঠাল ইউনিয়নের বালিয়ারপাড় গ্রামের একজন বলেন, ‘আমাকে আজ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তাই ১০ হাজার টাকা সুদে এনে তাদের টাকা দিয়েছিলাম। এখন এ টাকা কিভাবে পরিশোধ করব বুজতে পারছি না।’
বাসার মালিক আবু বকর সিদ্দিক সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে, আমি তাদের বিষয়ে কোনো খোঁজখবর না নিয়ে বাসা ভাড়া দিয়েছি। তাদের কোনো পরিচয়পত্র রাখতে পারিনি। এখন প্রত্যেকের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।’
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ত্রিশাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Leave a Reply