বিনা প্রশ্নে কালোটাকা চায় রিহ্যাব

ঢাকাঃ প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট (২০২২-২৩) পুনর্বিবেচনা না করলে আবাসনশিল্পে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছে আবাসন খাতের বিনিয়োগকারীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ সম্পর্কিত রিহ্যাবের প্রতিক্রিয়া শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) লিখিত বক্তব্যে এই দাবি করেন। একই সঙ্গে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ন্যায় অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানানো হয়।

অর্থনীতিতে আবাসনশিল্পের বিভিন্ন অবদান তুলে ধরে রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, উদীয়মান এই খাতে নানা রকম কর আরোপ এবং সরকারের নীতিসহায়তার অভাবে ক্রমে দেশের আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। কভিড মহামারি, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি এবং মানুষের সামর্থ্যরে মধ্যে মাসিক কিস্তি সুবিধা দেয়ার মতো এই খাতে পর্যাপ্ত আর্থিক ঋণপ্রবাহ না থাকায় অনেকের বাসস্থানের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। একের পর এক সমস্যা এই শিল্পকে সংকটে ঠেলে দিচ্ছে। এই অবস্থায় সরকারের আশু পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই সংকট উত্তরণ অসম্ভব। এই মুহূর্তে যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তবে দেশের অর্থনীতিতে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়বে।

আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব পেয়েছে। গত এক বছরে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৫ শতাংশ। গত বাজেট অনুমোদনের পর অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যার অভাবে দেশে বিনিয়োগ কম হয়েছে। স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে একটা ভালো সুফল আসবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘হাউজিং লোন’ নামে ২০ হাজার কোটি টাকার রি-ফিন্যান্সিং তহবিল গঠন, জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস এবং সেকেন্ডারি বাজার ব্যবসা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি এবং নির্মাণসামগ্রীর মূল্য হ্রাস করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, গত কয়েক মাস দফায় দফায় রডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম, ইস্পাতের কাঁচামালের ওপর শুল্ককর কমানো হোক। সেটি না করে উল্টো বিক্রয় পর্যায়ে প্রতি টন বিলেটের ওপর ২০০ টাকা এবং রডে ২০০ টাকা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বাড়ানো হয়েছে। ঘোষিত বাজেটে লিফটের কর ১১ শতাংশ থেকে এক লাফে ১৯ শতাংশ বেড়ে ৩০ শতাংশে উঠেছে। নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে নতুন ও নির্মাণাধীন প্রকল্পে প্রতি বর্গফুটের নির্মাণব্যয় প্রায় ৫০০ টাকা করে বৃৃদ্ধি পেয়েছে। ৫০০ টাকা নির্মাণব্যয় বৃদ্ধি পেলে প্রতি বর্গফুটের জন্য গ্রাহককে বাড়তি বহন করতে হবে প্রায় এক হাজার টাকা। কারণ ডেভেলপাররা অধিকাংশ জমি গ্রহণ করি ৫০:৫০ রেশিওতে। বাড়তি দাম ক্রেতার ওপর পড়বে এবং ‘সবার জন্য আবাসন’ এ সেøাগানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এবং অনেকের আবাসনের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইন্তেখাবুল হামিদ, সহসভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ, সহসভাপতি-২ নজরুল ইসলাম, সহসভাপতি-৩ লায়ন শরীফ আলী খান, সহসভাপতি (ফিন্যান্স) প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।

আমাদের বাণী/১৯/৬/২০২২/বিকম

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.