বোরকা পরা সাংবিধানিক অধিকার

ঢাকাঃ বোরকা বা হিজাব পরা নারীর সাংবিধানিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সারা দেশের ১৫টি জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বোরকা পরায় হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি মুজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আগামী দুমাসের মধ্যে শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ধর্ম সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সব ধর্মের মানুষের এখানে সমান অধিকার। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা এবং রাষ্ট্র কর্তৃক সে অধিকার সমুন্নত রাখা একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। বোরকা বা হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের আদৌ হেনস্থা করা হয়েছে কি না এবং হেনস্থা করা হয়ে থাকলে এর পেছনে কারা দায়ী এবং তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে।’ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বোরকা বা হিজাব পরায় হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলা ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- ১. নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বারবারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ২. সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ব্রজেন্দ্রগঞ্জ আর সি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩. সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, ৪. কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ৫. নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়, ৬. চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোয়ারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়, ৭. চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার সাতবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ৮. গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ৯. মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কালকিনি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ১০. নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ কাজী ফজলুল হক উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ১১. সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার বিষম ডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ১২. ফেনীর জিয়া মহিলা কলেজ, ১৩. বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আগৈলঝাড়া পয়সা মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ১৪. সিলেটের কিশোরী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় এবং ১৫. চট্টগ্রামের পতেঙ্গা মাইজপাড়া মাহমুদুন্নবী উচ্চ বিদ্যালয়।

এদিকে রিট আবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হিজাব পরতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যা ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। এমন ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়।

আমাদের বাণী/০২/০৬/২০২২/টিএ

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.