দেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে ৮ শতাংশ

ঢাকাঃ বাংলাদেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা ৮ শতাংশ কমেছে সরকারি পদক্ষেপের কারণে। ২০০৯ সালে ৪৩ দশমিক ৩ থেকে ৮ শতাংশ কমে বর্তমানে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশে নেমেছে বলে জানিয়েছেন ধূমপান বিরোধী সংগঠন মানসের সভাপতি অরুপ রতন চৌধুরী।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২ উপলক্ষে সোমবার দুপুরে মানস (মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শুধু ক্যানসারই নয়, ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ধূমপান ছাড়তে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মানস সভাপতি অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, তামাকজনিত মৃত্যু সারাবিশ্বে ৮০ লাখ। আর কোনো রোগেই এত বেশি মৃত্যু হয় না। সড়ক দুর্ঘটনা, হত্যাসহ আর কোনো ক্ষেত্রেই এত বেশি মৃত্যু ঘটে না। বিশ্বে বাংলাদেশর অবস্থান অষ্টম। বিশ্বের ১১০ কোটি ধূমপায়ীর মধ্যে ৮০ কোটির অবস্থানই নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশ বলেও জানান তিনি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা এবং সার্বিক উন্নয়নে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো তামাক। এ কথা সর্বমহলে স্বীকৃত। তামাক চাষাবাদ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবনসহ প্রতিটি ধাপেই পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে-২০১৭ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) মানুষ তামাকজাত দ্রব্য সেবন করে। ২০০৯ সালে তামাকসেবী ছিল ৪৩.৩ শতাংশ। তামাক সেবনের শতকরা হার নিম্নগামী হয়েছে, যা আশার কথা। পক্ষান্তরে, এমন কিছু অসামঞ্জস্যতা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যা তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৩০ শতাংশ কর্মস্থল ও ২১ শতাংশ পাবলিক প্লেসে নারী পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। এজন্য নারীরা ধূমপানে শিকার হয়ে ক্যানসারসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ নারীদের মধ্যে ধূমপানের হার অত্যন্ত কম। এজন্য প্রকাশ্য ধূমপানে শাস্তি দিতে হবে।

অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর আড়াই লাখ মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন নতুন করে ই-সিগারেট এসেছে। এটি ধূমপানের বিকল্প নয়, বরং সমানভাবে ক্ষতিকর। অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও যে ই-সিগারেট ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, ধূমপান ছাড়লে ৮ ঘণ্টার মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমতে শুরু করে। এক সপ্তাহেই শ্বাসকষ্ট অনেক কমে যায়। আর পাঁচ বছরের মধ্যে ২৫টি রোগ থেকে মুক্তি মেলে। সংবাদ সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণে কিছু সুপারিশ পেশ করা হয়েছে।

‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

আমাদের বাণী/৩০/৫/২০২২/বিকম

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.