
ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে হত্যাচেষ্টা ও রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গিনেতা মুফতি আবদুল হাইকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার (২৫ মে) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জঙ্গি সংগঠন হুজি’বির প্রতিষ্ঠাতা আমির আবদুল হাই আরও একাধিক মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
২০০০ সালের ২২ জুলাই। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সেদিন আওয়ামী লীগের জনসভার আয়োজন চলছিল। শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্যান্ডেল তৈরি করার সময় সেনাবাহিনীর একটি দল ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করে। পরদিন ৪০ কেজি ওজনের আরও একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার পুলিশ হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করে।
সেই মামলা দুটি ২০১০ সালে গোপালগঞ্জ আদালত থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট একটি মামলায় ১০ আসামিকে ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ (গুলি করে) মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন বিচারিক আদালত। এ ছাড়া একজনকে যাবজ্জীবন ও তিনজনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা তিনটি আপিল ও সাতটি জেল আপিল করেন।
মামলায় মূল আসামি ছিলেন জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি হান্নান। অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়। শুধু কোটালীপাড়ার ওই ঘটনাই নয়, বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে বারবার হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে। তার ওপর এ পর্যন্ত অন্তত ১৯ বার হত্যাচেষ্টার কথা জানা যায়।
২০০১ সালের পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে সাত ব্যক্তি এবং পরে আরও তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। এতে ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এই মামলার রায় হয় ২০১৪ সালের ২৩ জুন। রায়ে জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ দেন আদালত।
কারাগারে থাকা অপর ৯ আসামি হলেন- মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, শাহাদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া। এ ছাড়া শীর্ষ জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সীর ফাঁসি কার্যকর হয় অপর এক মামলায়। ফলে এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে পলাতক চার আসামি হলেন- সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মুফতি শফিকুর রহমান ও মুফতি আবদুল হাই।তাদের মধ্যে মুফতি শফিকুরকে গত ১৪ এপ্রিল ভৈরব থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
আমাদের বাণী/২৫/৫/২০২২/এসি
Leave a Reply