তিতাস গ্যাস কর্মচারীর কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত মোট ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন তিতাস গ্যাসের এক কর্মচারী। তদন্তকালে এর প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি তিতাসের প্রধান কার্যালয়ের নেটওয়ার্ক বিভাগের সিনিয়র ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হাছানুর রহমান। তার স্ত্রী নাহিদা সুলতানা ও তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়েছে। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আলী আকবর চার্জশিটটি দাখিল করেছেন। উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক শেয়ার বিজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘অফিসিয়ালি চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি আমি এখনও জানি না। জানার পর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিতাসের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ডিভিশন) মুনির হোসেন খান বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত হবে। তবে আমরা এখনও চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি জানি না।’

দুদকের আইন শাখার একজন উপপরিচালক বলেন, ‘চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর আসামিকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে। চার্জশিট দাখিলের পর দুদকের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়। তারপর তারা ব্যবস্থা নেন।’

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সম্পদ বিবরণীতে হাছানুর রহমান ১ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ১২৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। তদন্তকালে দুদক ১ কোটি ৬০ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পেয়েছে। তিনি নিজ নামে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ গোপন করেছেন। আয়কর নথি পর্যালোচনায় তার আয় থেকে ব্যয় বেশি পাওয়া গেছে। তিনি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত মোট ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব সম্পদ নিজেদের দখলে রেখে পরে অর্জিত সম্পদ অসৎ উদ্দেশ্যে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করেছেন; যা দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অপরাধ।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে ঢাকার আজিমপুরে বসবাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি যশোরের শার্শা থানায়। ২০০১ সালে তিতাস গ্যাসে তিনি চাকরি শুরু করেন। ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হাছানুর রহমানের নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করা হয়। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর তারিখে সম্পদ বিবরণী কমিশনে দাখিল করেন। ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) ঢাকা-১-এ তার বিরুদ্ধে মামলা (নম্বর-১০) দায়ের করেন উপপরিচালক আলী আকবর। তদন্ত শেষে দুদক কমিশনের অনুমোদনের পর গত ১০ মে আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করা হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.