ধামরাইয়ে ধানকাটা শ্রমিকের মজুরি ১৪০০ টাকা

ঢাকাঃ জেলার ধামরাই উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াইয়ের শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকের মজুরি ১ হাজার থেকে এক হাজার চারশ টাকা হওয়ায় সময়মতো ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা। অন্য দিকে শ্রমিকের দিকে না তাকিয়ে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটার পরামর্শ কৃষি কর্মকর্তা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৬ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় চলতি বছর ১৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-ধান ২৯, ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-ধান ৮৮, ব্রি-ধান ৯২, ব্রি-ধান ৫০সহ হাইব্রিড জাতের বেশকিছু ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যেই সকল জাতের ধান পেকে গেছে। ধামরাইয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ জমির ধান কেটে ফেলার হয়েছে আরো ৬০ শতাংশ জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে।

উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের মারাপাড়া গ্রামের কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, আমি এবার ৬ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। সব ধান পেকে মাঠে পড়ে আছে। দুঃখের বিষয় ধানগুলো কাটার শ্রমিকের মজুরি অনেক বেশি। দফায় দফায় বৃষ্টির কারণে আমার বেশকিছু ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে। এছাড়া কারেন্ট পোকার আক্রমণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমার সবমিলিয়ে ১লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ৬ বিঘা জমি আমার ধান হবে ৯০ মণের মত এতে আমার ক্ষতিই হবে।

একই এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি, ধান কাটা ও মাড়াই করার জন্য শ্রমিকের মজুরি ১৪শত টাকা কিভাবে কি করবো কিছুই জানি না। ১মণ ধানের দামের থেকে শ্রমিকের মজুরি বেশি। এবারই শেষ আর ধান চাষ করবো না।

উপজেলার কাওয়াখোলা গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, বিদেশি (অন্য জেলার) শ্রমিক না পেয়ে আমি দেশি (নিজ এলাকার) ৫ জন শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা শুরু করেছি। এবার ১০০ শতাংশ (১ একর) জমির ধান কাটার জন্য ১৮হাজার টাকা চুক্তি করে শ্রমিক ঠিক করেছি। একবেলা মাছ-মাংস দিয়া ভাতও খাওয়াইছি।

এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান জানান, প্রতিবারের চেয়ে এবার ধামরাইয়ে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা খুবই খুশি ফলন বেশি হওয়ায়। জমির ধান গুলা ৮০পারসেন্ট পেকে গেলেই ধান দাড়ানো অবস্থায় কেটে ফেললে কৃষকদের ক্ষতি কম হবে। আর যারা শ্রমিক সংকটের জন্য ধান কাটতে পারছে না তাদেরকে আমি অনুরোধ করবো তারা যেন তার নিজ এলাকা বা আশেপাশে একটু খোঁজ নেয় এবার উপজেলা থেকে ২৪টি হারভেস্টার মেশিন দেয়া হয়েছে। কৃষকরা খোঁজ নিয়ে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে যেনো ধান কেটে ফেলে। এতে কৃষকদের টাকা ও সময় দুটোই কম লাগবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.