জেলে থেকেও হত্যা মামলার আসামী

বগুড়াঃ জেলার আদমদীঘিতে বাবাকে মারধর করে হত্যা করার অভিযোগে মামলা হয়েছে ছেলের বিরুদ্ধে। অথচ পূর্বের একটি মামলায় তিনি গত বছর থেকে জেলে রয়েছেন। উপজেলার কুন্দগ্রাম ইউনিয়নের বশিকোড়া গ্রামের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের আজিম উদ্দীন দীর্ঘদিন প্যারালাইসিস রোগে ভুগছিলেন। তার ছোট স্ত্রী আমেনা বেগম, ছেলে আলম খাঁ ও আলাউদ্দীন খাঁ সহ পরিবারের সবাই একই বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। গত ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে একটি মারপিট মামলায় পুলিশ আলাউদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আলাউদ্দীন জেলখানায় থাকা অবস্থায় একই বছরের ১৬ নভেম্বর সকাল ১০ টার সময় মাথা ঘুড়ে ঘরের ভিতরে পড়ে গুরুতর আহত হন আলাউদ্দীনের বাবা বৃদ্ধ আজিম উদ্দীন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৮ নভেম্বর নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে গত ২০ নভেম্বর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২ ডিসেম্বর সকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বৃদ্ধ আজিম উদ্দীনের বড় বউয়ের ছেলে দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে আদমদীঘি থানায় তার সৎ ভাই এর শ্বাশুড়ী তারা বিবি (৪৮), সৎ ভাই আলম খাঁ এর স্ত্রী মুনিরা বিবি (৩১), সৎ ভাই কালাম খাঁ এর স্ত্রী শাহনারা বিবি (৪২) ও জেলখানায় বন্দি সৎ ভাই আলাউদ্দীন খাঁ এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদী দেলোয়ার খাঁ এর সাথে তার সৎ ভাইদের বসতবাড়ির জায়গা-জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর আলম খাঁ ও আলাউদ্দীন খাঁ তাদের পিতা আজিম উদ্দীনকে হত্যার উদ্যেশে মারপিট করে গুরুতর জখম করে। ২০ নভেম্বর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ ডিসেম্বর সকালে সে মারা যায়।

মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকেলে এই মামলার প্রধান আসামী তারা বিবি বলেন, আমার মেয়ের শ্বশুর আজিম উদ্দীনের অসুস্থতার খবর পেয়ে ঘটনার দিন দেখতে এসে হত্যা মামলার আসামী হই। মামলাটি সিআইডি পুলিশ দ্বারা সঠিকভাবে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদ্ধর্তৃন কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দীন বলেন, মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যা করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ আছে এবং এই মামলায় আলাউদ্দীনকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.