
ঢাকাঃ একটি ফুল শুধু মে মাসে ফোটে। মাসের যেদিন থেকে শুরু, ঠিক সেদিন থেকেই বাগানে এর দেখা মেলে। কী আশ্চর্য, না? প্রতিবছর একই সময়ে, একই নিয়ম মেনে ফোটা ফুলটির নাম মে ফ্লাওয়ার। ঠিক ধরেছেন। মাসের সঙ্গে মিল রেখেই মে ফ্লাওয়ার নামকরণ করা হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে নামকরণের যথার্থতা প্রমাণ করে চলেছে প্রিয় ফুল। ফুলটি ফুটতে দেখলে বোঝা হয়ে যায়, এখন মে মাস। আবার মে মাস শুরু হলেই অনুমান করা যায়, ফুলটি কোথাও না কোথাও নিশ্চিত ফুটে আছে।
প্রতিবছরের মতো এবারও মাসের প্রথম দিন কৌতূহলবশত বাগানের দিকে তাকাতেই মে ফ্লাওয়ারের দেখা মিলেছিল। শ্যামলীর রিংরোডের একটি বাসায় সদ্য ফোটা ফুল দেখার সুযোগ হয়। পরে অবশ্য রাজধানীর অনেক নার্সারিতে দেখা হয়েছে। একটি ঝরে পড়ছে, ফুটছে অন্যটি। মাসজুড়ে চলবে এই প্রক্রিয়া। ফুলগুলো যেমন বড়, তেমনি অনেকদিন স্থায়ী হয়। অবশ্য গত কদিন টানা বৃষ্টি ছিল। ঝড়োহাওয়া বয়ে গেছে। এ কারণে ফুলের কিছু ক্ষতি হয়েছে। মাথার চুলের মতো এলোমেলো হয়ে গেছে গঠন।
মে ফ্লাওয়ার স্বতন্ত্র সৌন্দর্যের। গাছ বছরের বেশিরভাগ সময় টবের মাটির নিচে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এপ্রিলের দিকে পেঁয়াজের মতো উঁকি দিতে থাকে। তারপর একটু একটু করে পাতা ও সবুজ নরম কান্ড বের হতে দেখা যায়। দুই-তিন দিন আগে থেকে ফুল ফোটার একটা আভাস পাওয়া গেলেও সৌন্দর্যের পুরোটা নিয়ে প্রকাশিত হয় মে মাসের প্রথমদিন।
উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা অনুযায়ী, মে ফ্লাওয়ারের অস্তিত্ব প্রথম চোখে পড়ে আফ্রিকা মহাদেশে। বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশেই হয়। বাংলাদেশেও আছে বহুকাল ধরে। গোলাকার দেখতে হওয়ায় ফুলটিকে বল লিলিও বলা হয়। একই কারণে বলা হয় গ্লোব লিলি। পাউডার পাফ লিলি, আফ্রিকান ব্লাড লিলি নামেও পরিচিত। মে ফ্লাওয়ার গাছ লম্বায় ১০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফুল প্রায় ৩ সেমি চওড়া হয়।
এর পাতাও খুব সুন্দর। ফুল সম্পূর্ণরূপে ঝরে পড়ার বেশ কয়েক মাস পর পর্যন্ত লম্বা সবুজ পাতা টবজুড়ে ছড়িয়ে থাকে। শুধু পাতার সৌন্দর্যও কম উপভোগ্য নয়। তবে এখন যেহেতু ফুল আছে, তা-ই দেখুন। আর কদিন পরে কিন্তু থাকবে না!
Leave a Reply